মানুষের ভুল ধারণা, বাজার চলতি কিছু ওষুধে ফ্যাটি লিভার বাগে আসবে। আসলে, এই রোগের ক্ষেত্রে ওষুধের বিকল্পগুলিই বেশি কার্যকর। রুবি জেনারেল হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. অপূর্বকুমার পাল বুঝিয়ে দিলেন কখন ওষুধ, কখন ব্যায়াম। জিনিয়া সরকার
ফ্যাটি লিভার খুব চেনা অসুখ। কিন্তু কী করলে সমস্যার সমাধান হবে তা নিয়ে স্বচ্ছ জ্ঞান অনেকেরই নেই। মুঠোমুঠো ওষুধ খেলেই রোগ সারে না। জানতে হবে পরিত্রাণের সঠিক উপায়। এদেশে ফ্যাটি লিভার ডিজিজে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত। মহিলা, পুরুষ এমনকী, শিশুরাও এর থেকে বাদ নেই। তবে এই অসুখে ওষুধই শেষ কথা নয়, সঙ্গে এক্সারসাইজও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৫ শতাংশের যদি ফ্যাটি লিভার থাকে তাহলে তার ১ শতাংশ রোগীর ওষুধ লাগে, বাকি ক্ষেত্রে লাইফস্টাইল ঠিক করা বা কায়িক পরিশ্রমের দ্বারাই রোগ মুক্তি সম্ভব।
রিসার্চ কী বলছে?
গবেষণার তথ্য, ফ্যাটি লিভারের ওষুধ থাকলেও, ফিজিক্যাল এক্সারসাইজও ওষুধের মতোই কার্যকর। ‘পেন স্টেট কলেজ অফ মেডিসিন রিসার্চ’-এ গবেষকদের দাবি, সপ্তাহে মোট ১৫০ মিনিট বা আড়াই ঘণ্টা যদি মাঝারি থেকে দ্রুতগতির অ্যারোবিক এক্সারসাইজ করা যায়, যেমন হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতারকাটা ইত্যাদি। তাহলে তা তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ফ্যাটিলিভার নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম। একাধিক স্টাডিতেই গবেষকরা আশানুরূপ ফল পেয়েছেন। এই তথ্য ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত। এক্সারসাইজ ননঅ্যালকোহলিক ফ্যাটিলিভার নিরাময়ে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। এমন অনেক ক্ষেত্রেই ফ্যাটিলিভারকে নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দিষ্ট ওষুধ দেওয়া সম্ভব হয় না, তখন কিন্তু সুস্থ হয়ে ওঠার একমাত্র পথ ব্যায়াম। এই তথ্য ‘দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি’-তে প্রকাশিতও হয়েছে।
ওষুধ কখন দরকার
ফ্যাটি লিভারে লিভার ফাংশান টেস্ট অন্যতম রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা। এই টেস্টে যদি দেখা যায় ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে এসজিপিটি বেশি থাকে সেক্ষেত্রে ওষুধ দিয়ে ট্রিটমেন্টের দরকার। এসজিপিটি ৬০-এর বেশি থাকলে চিকিৎসার প্রয়োজন। সঙ্গে পর্যাপ্ত এক্সারসাইজ করতে হবে।
অপুষ্টি বা অতিরিক্ত খাওয়া, দায়ী এগুলিই
ঠিক কী হয়?
লিভারে অতিরিক্ত ফ্যাট জমাকেই বলা হয় ফ্যাটি লিভার। সাধারণত ওবেসিটি বা যাঁরা খুব মোটা তাঁদেরই ফ্যাটিলিভার হবে এটা অনেকেই মনে করেন। তা নয়। যাঁরা মোটা নন, তাঁদেরও সম্ভাবনা রয়েছে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার। আলট্রাসাউন্ড, ফাইব্রোস্ক্যান, এমআরআই করে বোঝা সম্ভব লিভারে ফ্যাট জমেছে কি না। সঙ্গে দরকার লিভার ফাংশন টেস্ট করে দেখা। ফ্যাটিলিভারের অনেক গুলি গ্রেড হয়। গ্রেড ১-২ নিয়ে অতটা চিন্তার ব্যাপার থাকে না। কিন্তু গ্রেড ৩ হলে চিন্তার বিষয়।
খাওয়ার ব্যাপারে মাথায় রাখা জরুরি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.