Advertisement
Advertisement

Breaking News

Anemia Treatment

মহিলারা সাবধান! রক্তাল্পতা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে, এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন

দেশের প্রতি ১০ জন মেয়ের মধ্যে ৬ জনই নাকি রক্তাল্পতার শিকার।

Know about Causes and Treatment of Anemia | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:September 26, 2023 8:46 pm
  • Updated:September 26, 2023 8:46 pm  

ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের রিপোর্ট, এদেশে টিনএজার মেয়েদের ১০ জনের মধ্যে ৬ জনই অ্যানিমিয়ায় (Anemia) আক্রান্ত। প্রায় সব রাজ্যেই এই সমস্যা ঊর্ধ্বমুখী। কীভাবে এর মোকাবিলা করা সম্ভব? জানালেন হেমাটোলজিস্ট ডা. তুফানকান্তি দলুই।

সারা ভারতবর্ষে এখন রক্তাল্পতা একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে এই দেশে মহিলা ও শিশুদের মধ্যে রক্তাল্পতার প্রকোপ খুব বেশি। প্রায় ৬০ থেকে ৭৫ শতাংশ মহিলা ও শিশুদের মধ্যে রক্তাল্পতা দেখা যায়। অন্যান্য দেশের তুলনায় এই হার অত্যন্ত বেশি। হিমোগ্লোবিনের কাজ হল শরীরের বিভিন্ন কোষ ও টিসুতে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেওয়া। তাই হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে কোষ ও টিসু পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার পায় না। ফলে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তাল্পতার পরিমাণ মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২ গ্রামের নিচে আর পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৩ গ্রামের নিচে নেমে গেলে তাকেই বলে রক্তাল্পতা।

Advertisement

Anemia

কেন বাড়ছে?
এই রক্তাল্পতার প্রধান কারণ হচ্ছে রক্তে লোহা, ভিটামিন বি টুয়েলভ বা ফলিক অ্যাসিডের অভাব। এছাড়া আরও কয়েকটি রক্তের রোগ যেমন থ্যালাসেমিয়া বা হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া এটির জন্য দায়ী। ছাড়াও আরও কয়েকটি বিরল রক্তের রোগ আছে যার জন্য অ্যানিমিয়া দেখা যায়।

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে রক্তাল্পতার প্রধান কারণ হচ্ছে সুষম আহার না করা। বিশেষ করে অল্পবয়সি মহিলা বা বালিকাদের মধ্যে জাঙ্ক ফুড বা ফাস্টফুড খাওয়ার জন্য রক্তাল্পতা বেড়ে যাচ্ছে। ক্রমাগতভাবে দেখা যাচ্ছে যে অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি খাচ্ছেন না। এই ধরনের খাবারে আয়রন বা লোহা থাকে। বয়ঃসন্ধির মেয়েদের মধ্যে অতিরিক্ত ঋতুস্রাবের জন্য অনেক সময় রক্তাল্পতা দেখা যায়। এই ধরনের রক্তাল্পতাকে আমরা আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া বলে থাকি।

Blood cells

এছাড়া গ্রামেগঞ্জে দেখা যায় অনেকেই খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি করেন। খালি পায়ে মাঠেঘাটে হাঁটলে মাটিতে বসবাসকারী হুকওয়ার্ম বা কৃমি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। সেগুলি আমাদের অন্ত্রে প্রবেশ করলে সমস্ত খাবারের পুষ্টি শুষে খেয়ে নেয়। ফলে রক্তাল্পতা দেখা যায়।

রক্তাল্পতার আরেকটি কারণ পাইলস বা অর্শের সমস্যা। সবুজ শাকসবজি না খাওয়ার ফলে অনেক মানুষের মধ্যেই অর্শ হয় তাদের মল দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। অতিরিক্ত রক্ত পড়লে সেক্ষেত্রে অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ, সুষম খাবার না খাবার জন্য এই রোগের উৎপত্তি।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে আজকাল মানুষের খাদ্যাভ্যাস বা ফুড হ্যাবিট বদলে যাওয়ার
জন্য অনেক সময় অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। শহরাঞ্চল বা মফস্বলেও আজকাল মানুষের খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে লোহা (আয়রন) বা ফলিক অ‌্যাসিড, ভিটামিন বি টুয়েলভ ও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান থাকছে না। সবুজ শাকসবজি ছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া মাছ ডিম মাংস ও দুগ্ধজাত নানা খাবার এসব পুষ্টির অভাব দূর করে। পুষ্টির অভাবজনিত রক্তাল্পতা সঠিক অর্থে কোন অসুখ না বিভিন্ন অসুখের সমষ্টিগত ফল।

[আরও পড়ুন: সেলুনের ব্লেড, রেজারে ঘাপটি মেরে রয়েছে হেপাটাইটিস বি, সি! সতর্ক থাকার নির্দেশ চিকিৎসকের]

কী করে বুঝবেন আপনিও এই দলে?
অ্যানিমিয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলি হল মাথা ঘোরা, মাথা ঝিমঝিম করা এবং শরীরের নানা রকম দুর্বলতা। খুব বেশি পরিমাণ হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা গেলে পা ফুলে যেতে পারে। শ্বাসকষ্ট বুক ধড়ফড় ও বুকে ব্যথার অনুভূতি হতে পারে। অতিরিক্ত অভাব দেখা দিলে শরীর ফ্যাকাশে লাগে ও হৃদরোগজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

Anemia--1

এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলেই হেমাটলজিস্ট বা রক্তরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরি। প্রাথমিক অবস্থায় রক্তের একটি হিমোগ্রাম টেস্ট করার প্রয়োজন। এই পরীক্ষা থেকে জানা যাবে আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা জানতে পারলেই আমরা রোগীর অ্যানিমিয়া হয়েছে কি না বুঝতে পারি। সঠিক সময়ে রোগ ধরা পড়লে এবং যথোপযুক্ত চিকিৎসা হলে অ্যানিমিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ।

শিশুদের হলে আরও চিন্তা
শিশুদের অ্যানিমিয়া হলে স্মৃতিশক্তি ও পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে ওঠে। বুদ্ধি ও মেধা এর ফলে প্রভাবিত হয়। গর্ভবতী মায়েদের অ্যানিমিয়া হলে তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হয়। গর্ভজাত শিশুর ক্ষতি হতে পারে। সেক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোগ নির্ণয় করে নিয়মিতভাবে আয়রন ও ফলিক অ‌্যাসিডের ট্যাবলেট খেতে হয়।

Pregnant
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে অ্যানিমিয়া কোন দুরারোগ্য ব্যাধি নয়। প্রথমত, খাদ্যাভ্যাস যদি ঠিক করা যায় তাহলে অ্যানিমিয়া প্রতিহত করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার দ্বারা সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আসা সম্ভব। না হলে বিপজ্জনক এই অসুখ।

[আরও পড়ুন: ছন্নছাড়া কথাবার্তা, সমস্ত কিছুতেই বিরক্তি, বয়সের ভারেই কি হারাচ্ছে স্মৃতি?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement