সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোগলাই খানা-পিনার নাম শুনলেই যেন জিভে জল আসে। কিন্তু উত্তর ভারতের খাবার এত স্পাইসি কেন হয়, তা হয়তো অনেকের কাছেই অজানা। এ স্বাদের নেপথ্যে রয়েছে একখানি ইতিহাস।
মোঘল সম্রাটদের হাত ধরেই ভারতে পারসি খাবারের পরিচিতি ঘটেছিল। সম্রাট বাবর তাঁর রান্নাঘরে ভারতীয় রাঁধুনিদের পারসি খাবারের নানা রেসিপি শিখিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের গরম আবহাওয়ায় সেসব খাবার খাওয়া দায় হয়েছিল। রান্না করে রাখলে তা বেশিক্ষণ ভালও থাকত না। সে আমলে তো আর ফ্রিজে খাবার রাখার মতো ব্যবস্থা ছিল না। তাই প্রচুর পরিমাণ খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেত। তাহলে উপায়? অনেক ভেবে সম্রাট ঠিক করেন, খাবারকে করে তুলতে হবে আরও স্পাইসি। কারণ মশলাদার-ঝাল খাবার-দাবারই বেশিদিন টাটকা থাকে। রেখে খাওয়াও যায়। কারণ এমন কিছু মশলা আছে যা খাবারে দিলে তাতে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে না। আর ভারতের মতো গরম আবহাওয়ার দেশে এমন খাবারই আদর্শ। তখন থেকেই বেশি মশলা দিয়ে খাবারের চল শুরু হয়। সেইসব রেসিপি আজও এ দেশে সুপারহিট। শুধু ভারতীয়রাই নন, বিদেশি পর্যটকও এই স্পাইসি আহারের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে চান না।
তবে প্রযুক্তির কল্যাণে খাবার টাটকা রাখতে আর এমন সব উপায়ের প্রয়োজন নেই। কিন্তু একবার যে এই রসনার স্বাদ উপভোগ করা গিয়েছে! সে তো আর ছাড়া যায় না। ভাবুন না, যদি মটন বিরিয়ানি কিংবা চিকেন কষায় স্পাইসি স্বাদ না পান, কেমন ফ্যাকাসে হয়ে যাবে সেই ডিশ। তাই সেই ট্র্যাডিশন মেনেই এখনও রান্না হয়। মানুষ জেনে গিয়েছেন উত্তর ভারতের খাবার মানেই স্পাইসি। এবার জানুন খাবার মশলাদার-ঝাল বানাতে কী কী উপকরণ ব্যবহার করা হয়?
রসুন, পেঁয়াজ, অরিগানোর মতো উপকরণ খাবারের ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। দারচিনি, জিরের মতো মশলা খাবারকে প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যাকটেরিয়া মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ক্যাপসিকাম, লঙ্কা, কালো জিরে, আদা, লেবুর রসও ব্যবহার করা হয় একই কারণে। এক একটি উপাদানের এক-একরকম ব্যাকটেরিয়া রোধের ক্ষমতা।
বর্তমান বিশ্বে উত্তর ভারতের খাবারের জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁয়েছে। রেস্তরাঁ থেকে বাড়ির রান্নাঘর, সর্বত্রই মোঘলাই খাবারের কদর। তবে হ্যাঁ, শুধু নানারকম মশলা মিশিয়ে দিলেই চলবে না। সঠিক পরিমাণে সঠিক মশলাটি দিলেই মিলবে আসল রাজকীয় স্বাদের মজা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.