সৌরভ মাজি, বর্ধমান: লকডাউনে মিষ্টির দোকান খোলায় কিছুটা ছাড় দেওয়া হলেও, মনের মতো রসগোল্লা-রাজভোগ আর মিলছে কই? রসপ্রেমী বাঙালির জলখাবার আর রাতে শেষ পাতে টাটকা মিষ্টি যেন লকডাউনের বাজারে ঠিক মন ভরাতে পারছে না। এই আক্ষেপ করতে করতেই বেশ কয়েকদিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এবার আক্ষেপের দিন শেষ। একেবারে গরমাগরম রসগোল্লা কিংবা ছানার মিষ্টি পৌঁছে যাবে আপনার বাড়ির দোরগোড়ায়। সৌজন্য রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি উদ্যোগ নিয়ে ঘরে ঘরে মিষ্টি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
লকডাউনে সংকটে পড়েছিলেন মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী, কারিগররা। সমস্যায় পড়েন ছানা উৎপাদনকারীরাও। এই পরিস্থিতিতে রসগোল্লা ও রাজভোগের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা করে রোজগারের দিশা দিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। একটি অনাথ আশ্রম প্রাঙ্গণে মিষ্টান্ন তৈরি করে তা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে তাঁরই উদ্যোগে। বিক্রিবাটা থেকে লাভের অংশ অনাথ আশ্রমের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজ্য সম্ভবত প্রথম এইভাবে মিষ্টান্নের হোম ডেলিভারি চালু করা হল প্রত্যন্ত কোনও গ্রামে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী-১ ব্লকের দামোদরপাড়ায় রয়েছে আশ্রম। মন্ত্রী স্বপনবাবু জানান, লকডাউন শুরু হওয়ার পর মিষ্টির দোকানও বন্ধ রাখা হয়। সেই সময় এলাকার মিষ্টির কারিগর ও ছানা উৎপাদকরা স্বপনবাবুর দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিছু ব্যবস্থা করার জন্য যাতে তাঁরা জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। তখনই স্বপনবাবু নিজের উদ্যোগে অনাথ আশ্রম প্রাঙ্গণে রাজভোগ তৈরির ব্যবস্থা করেন। করোনা সংক্রমণ রুখতে সবরকম সাবধানতা ও সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। তারপর তা বাড়ি বাড়ি ডেলিভারির ব্যবস্থা করা হয়। স্বপনবাবু বলেন, “মিষ্টির দোকান খোলা রাখার ছাড়পত্র পরে মিলেছিল। তার আগে থেকেই মিষ্টির হোম ডেলিভারি শুরু করা হয়। এর ফলে কারিগর, ছানা উৎপাদকরা লাভবান হয়েছেন। আর অনাথ আশ্রমে তৈরি রাজভোগ-রসগোল্লা বিক্রি করে লাভ যা হচ্ছে, তা আশ্রমের কাজে লাগছে।” গেরস্থ বাড়িতে এই মিষ্টি পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি কালনার মহকুমা শাসকের কাছেও সেই রাজভোগ পাঠিয়েছেন স্বপনবাবু। শুক্রবার বর্ধমানে জেলাশাসকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে এই লোভনীয় মিষ্টি।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, লকডাউন যতদিন চলবে ততদিন এইভাবেই রাজভোগের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা চালু রাখা হবে। রসগোল্লা তৈরির পর তা প্যাকেটজাতও করা হচ্ছে আশ্রমে। তার পর অর্ডার অনুযায়ী তা নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। স্বপনবাবু বলেন, “ফাস্টফুড বা সাধারণ খাবার হোম ডেলিভারি হয়। লকডাউনে পিরিয়ডে তা আরও বেড়েছে অনেক জায়গায়। কিন্তু গ্রাম বাংলায় রসগোল্লা-রাজভোগের হোম ডেলিভারি হয় না। সেটা এই আশ্রমেই প্রথম শুরু করা হল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.