সুলয়া সিনহা ও সুপর্ণা মজুমদার: শোনা যায়, জয়নগরের বহড়ু এলাকার একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। কনকচূড় ধানের খই ও নলেন গুড় মিশিয়ে নতুন এক ধরনের মিষ্টি তৈরি করে তাঁকে দিয়েছিলেন যামিনীবুড়ো। নতুন মিষ্টির অসামান্য স্বাদে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। সেই থেকেই শুরু জয়নগরের মোয়ার খ্যাতির যাত্রা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপকরণ কিছু পালটেছে বটে, কিন্তু স্বাদের আভিজাত্য একই রয়ে গিয়েছে। এখনও শীত আসলেই বাঙালির চোখ যেন চাতকের মত চেয়ে থাকে দোকানে সাজানো মোয়ার প্যাকেটগুলির দিকে। এহেন জয়নগরের মোয়া এবার সরকারিভাবে প্রথমবার পাড়ি দিল বিদেশে। আর এই অবসরেই মোয়া হাবের দাবি জানালেন মিষ্টি নির্মাতা রণজিৎ শ্যামসুন্দর।
হেমন্ত শেষ হতে না হতেই মোয়ার মরশুম শুরু হয়ে যায়। যেবার শীত ভাল পড়ে, সেবার মোয়াও ভাল হয়। শ্যামসুন্দরের মোয়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ডেও গিয়েছে। তবে কোনও প্রবাসী পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী তা এতদিন পাঠানো হয়েছে বলে জানান রণজিৎ শ্যামসুন্দর। তাঁর কথা অনুযায়ী, মোয়া হাব তৈরি হওয়া খুবই প্রয়োজন। তাহলে বাংলার এই মিষ্টি স্বাদ প্রায় একমাস সংরক্ষণ করা যাবে। তাতে ব্যবসার আরও উন্নতি হবে। বাংলার মিষ্টির সুখ্যাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।
শোনা গিয়েছে, বহুদিন ধরেই জয়নগরের মোয়া বিদেশে রপ্তানির চেষ্টা চলছিল। কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত উদ্যোগী হয় কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনে থাকা সংস্থা ‘অ্যাপেডা’। তাদের ও একটি রপ্তানিকারক সংস্থার উদ্যোগে জয়নগরের মোয়া ও উন্নতমানের নলেনগুড় বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে। জানা গিয়েছে, রপ্তানি করা মোয়ার প্যাকেটগুলিতে ব্যাচ নম্বর, মোয়া তৈরির তারিখ ও মেয়াদ কত তারিখ পর্যন্ত তা উল্লেখ করা রয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় খাদ্য নিয়ামক সংস্থা ফ্যাসাইয়ের নম্বর এবং কেমিক্যাল অ্যানালিসিস রিপোর্টও দেওয়া আছে।
ছবি ও ভিডিও- পিন্টু প্রধান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.