দেবব্রত মণ্ডল, জয়নগর: আজকের জেট যুগ ফাস্ট ফুডের যুগ। কেক, পেস্ট্রি, বার্গার, চাউমিন, এগরোল – এসবের দিকেই বেশি ঢুকেছে যুবসমাজ। স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হলেও জাঙ্ক ফুডের দিকেই বেশি আসক্তি যুবসমাজের। শীতকালের (Winter) নতুন গুড় আর জয়নগরের মোয়া (Jaynagar Moa) আর তেমন টানে না তাদের। বাংলায় মোয়ার কদর কমছে। এদিকে, বিদেশে নতুন ধরনের জয়নগরের মোয়ার চাহিদা নাকি তুঙ্গে। বিশেষত নতুন গুড়, কাজু-কিসমিস দেওয়া জয়নগরের মোয়া এবছর বিদেশে রপ্তানি (Export) হচ্ছে। আর সেটাই এখন ভরসা মোয়া প্রস্তুতকারীদের কাছে। সেইসঙ্গে আক্ষেপও, গ্রামবাংলার তৈরি সুস্বাদু খাবার সেভাবে চেখেই দেখছে না বাঙালির যুব প্রজন্ম।
এককালে শীতকাল (Winter)মানেই নলেন গুড় আর জয়নগরের মোয়া। কনকনে শীতে বাঙালির মুখে জয়নগরের মোয়া ছাড়া অন্য কোনও জিনিসের স্বাদ যেন বিস্বাদ লাগতো। কিন্তু সেই চিত্র বদলে গিয়েছে। যুগবদলে স্বাদও বদলেছে যুব প্রজন্মের। শীতে এখন রকমারি কেক-পেস্ট্রি (Pastry) খেতেই তারা বেশি পছন্দ করছে। কিন্তু মুখের স্বাদ বদলের জন্য জয়নগরের মোয়া তো অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার। তাতেই বা কী? নিবেদিতা দাস নামে এক তরুণীর কথায়, ”আমাকে সপ্তাহে সাতদিন কেক, পেস্ট্রি, মোমো, বার্গার দিলে আমি খেতে পারব কিন্তু সপ্তাহের সাতদিন আমাকে এই মোয়া দিলে খেতে পারব না। ছোটবেলা থেকে জয়নগরে বেড়ে ওঠা মোয়া আমরা তৈরি করা দেখি প্রতিদিন। এটি একটি ঋতুভিত্তিক খাবার। কিন্তু কেক, পেস্ট্রি, বার্গার, চাইনিজ ফুড প্রতিদিন সারাবছর আমাদের কাছে থাকে। মোয়া কিন্তু থাকে না।”
তবে পরোয়া নেই। মোয়া প্রস্তুতকারী রঞ্জিত দাস বলছেন, বিদেশে এখন মোয়ার চাহিদা দারুণ। তাদের দাবি, দুধের কোনও সামগ্রী ছাড়া মোয়া তৈরি করতে। তাই খাঁটি নলেন গুড়, বিশেষ একটি ধানের খই এবং কাজু-কিসমিস দিয়ে মোয়া তৈরি করা হচ্ছে। তা প্যাকিং করে রপ্তানির জন্য পাঠাচ্ছেন বাংলার মোয়া বিক্রেতারা। চলতি মরশুমে তার চাহিদা বেশ ভালো। মোয়া প্রস্তুতকারী বাবলু ঘোষের কথাও একই। বিদেশে এই সাবেকি জয়নগরের (Jaynagar) মোয়ার যতটা কদর, দেশের মাটিতে তার কিছুই নেই। অনেকটা ‘গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না’ গোছের ব্যাপার।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.