Advertisement
Advertisement
হার্বাল টি

হার্বাল টি’র দাপটে কোণঠাসা সবুজ পাতা, সুদিন ফেরানোর উদ্যোগ টি বোর্ডের

নয়া ব্র‌্যান্ডের দাপটে ধাক্কা খাচ্ছে প্রচলিত চায়ের বাজার।

Fresh green leaf tea losses market for fake Herbal tea
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:September 14, 2019 3:35 pm
  • Updated:September 30, 2019 1:06 pm  

তরুণকান্তি দাস: সকালে উঠে এক কাপ চা। না ঠিক চা নয়, গালভরা নামের হার্বাল টি। সন্ধ্যায় জিঞ্জার অথবা লেমন টি। বঙ্গজীবনের অঙ্গ হয়ে ওঠা ধূমায়িত চা ঘিরে বাসা বাঁধা নস্টালজিয়াকে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে নয়া ট্রেন্ড। আর সেই নয়া ব্র‌্যান্ডের দাপটে ধাক্কা খাচ্ছে প্রচলিত চায়ের বাজার। যা ঘিরে বিভ্রান্তি তুঙ্গে। সেই বিভ্রান্তি কাটাতে এবার আসরে নামছে টি বোর্ড এবং চা উৎপাদক সংস্থাগুলি।

[আরও পড়ুন: পুজোর শপিংয়ের মাঝে এক কাপ ‘তন্দুরি চা’ হয়ে যাক, জানেন কোথায় পাবেন?]

[showad block=2]

Advertisement

বিশেষ করে ছোট বাগানের মালিকরা এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। আর তাঁরাই এগিয়ে এসেছেন বাজারের এই হার্বাল চা সেবনের প্রবণতা কাটাতে। যাদের মতে, হার্বাল টি বলে আসলে কিছু হয় না। চায়ে সুগন্ধী মিশিয়ে বারোটা বাজানো হচ্ছে আসল স্বাদের। গ্রিন টি বলে যে স্বাস্থ্যসম্মত উৎপাদন বাজার মাত করেছে তাকে অন্য মোড়কে ক্রেতাদের সামনে ফেলছেন কিছু ব্যবসায়ী। যা ঘিরে মানুষের মধ্যে একটা হুজুগ কাজ করছে। যা আদপে কতটা ঠিক কতটা ভুল, ঠিক কতখানি কার্যকর তা চিন্তাভাবনা না করেই।

পরিস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তা বোঝাতে গিয়ে টি বোর্ডের এক কর্তা বলেন, ‘এখন বড় চা কোম্পানিগুলির অনেকেই হার্বাল টি নামে প্রোডাক্ট বাজারে ছাড়ছে। বলা ভাল এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হচ্ছে। না হলে ক্রেতা হাতছাড়া হয়ে যাবে। বাজারে একটু বড় দোকান হলেই হার্বাল চা রাখতে হচ্ছে। তার কারণও সেই বাজার। বিষয়টা এমন হুজুগের পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে আমাদের সচেতনতা বাড়াতে প্রচারে নামার কথা ভাবতে হচ্ছে। আসলে মানুষ গ্রিন টি-র সঙ্গে অন্য সব সুগন্ধী চা-এর বিষয়টি গুলিয়ে ফেলছেন। অধিকাংশ মানুষ হার্বাল টি-এর নামে যা খাচ্ছেন তা হল সাধারণ চায়ের সঙ্গে মেশানো নানা সুগন্ধী। যা মোটেও উপকারী নয়। অর্গানিক চা এক জিনিস আর হার্বাল চা অন্য। সেই ফারাকটাই ধরতে পারছেন না অনেকে। গ্রিন টি-তে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।’

[আরও পড়ুন: দিল্লির রেস্তরাঁয় মেনু ‘৩৭০ ধারা’, কাশ্মীরিদের জন্য বিশেষ ছাড় ঘোষণা]

গবেষকরা বলছেন, গ্রিন টি নিয়মিত তিন কাপ খেলে ডায়বেটিস সামান্য হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকে। হৃদযন্ত্রের পক্ষেও ভাল। সাহায্য করে মেদ ঝরাতে। যার যাত্রা শুরু হয় চিনের হাত ধরে। এবং এখন এশিয়ার প্রায় প্রতিটি দেশ সেই পথের পথিক। কিন্তু, গ্রিন টি নয়, বাজারে বেশি বিকোচ্ছে হার্বাল চা। সেটা কী? স্মল টি গ্রোয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘ওটা আসলে কোনও চা নয়। নানা পাতা এবং সুগন্ধীর মিশ্রণ। মানুষ যা বুঝতেই পারছেন না। সংকটটা এখানেই। আমরা হার্বাল টি’র বিরোধী নই, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ একে গ্রিন টি’র সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন। সমস্যা এখানেই। বিষয়টি নিয়ে টি বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে।’

টি কনসালট্যান্টস ইন্ডিয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞ শ্যামল ঘোষাল বলেন, ‘হার্বাল টি’কে একটা বিশেষ ভাবে তৈরি পানীয় হিসেবে ধরা যেতে পারে। কিন্তু, তা কখনও চা নয়। অনেক সময় তুলসী পাতার প্রক্রিয়াকরণ করে সুগন্ধী মিশিয়ে হার্বাল টি বলে চালানো হচ্ছে। যার মধ্যে চায়ের ‘চ’ নেই, তা কীভাবে মানুষ নিচ্ছেন সেটা ভাবার সময় এসেছে।’ তবে একে সময়ের ডাক বলে মনে করছেন অনেক উৎপাদক এবং বাগান মালিক। তাঁরা বলছেন, মানুষ যা চাইবেন, সেটা দেওয়া আমাদের কাজ। কোনও ভেজাল বা খারাপ গুণগত মানের না হলেই হল। তাই হার্বাল টি’কে নিষিদ্ধ করার কোনও কারণ নেই। কিন্তু, টি বোর্ডের কাছে এমন প্রস্তাবও এসেছে, কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি হস্তক্ষেপ করুক, যাতে ‘হার্বাল টি’ নামটা দিয়ে বাজার ধরার উদ্যোগ বন্ধ হয়। আপাতত এই লড়াই কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেদিকে তাকিয়ে বাগান মালিকদের একাংশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement