অর্ণব দাস, বারাসত: যিনি রাঁধেন, তিনি চুল বাঁধেন। তেমনই যিনি এমএ-বিএড (MA-B.Ed) পাশ করেন, তিনি দারুণ দক্ষিণী খাবারও রাঁধতে পারেন। সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছেন মধ্যমগ্রামের (Madhyamgram) মেয়ে চামেলি মিস্ত্রি। এমএ, বিএডের ডিগ্রি নিয়েও চাকরি মেলেনি। তাই বাবাকে সঙ্গী করে দক্ষিণী খাবারের কাউন্টার খুলেছেন তরুণী। ‘সাউথ জাইকা’ নামে সেই ফুড স্টল এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল (Viral। ধোসা-সহ রকমারি দক্ষিণ ভারতের রকমারি সেসব মেনুর স্বাদ দারুণ!
এর আগে হাবড়ার (Habra) এমএ পাশ চাওয়ালি এভাবেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছিলেন। ইংরাজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পরও চাকরি মেলেনি। তাই স্বনির্ভর হতে চায়ের দোকান খুলেছিলেন তিনি। তারই পথ অনুসরণ করে এবার দক্ষিণী খাবারের দোকান খুলে ফেললেন চামেলি। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা আরও বেশি। এমএ, বিএড পাশ। তাই অবশেষে বাবাকে সঙ্গী করেই মধ্যমগ্রামে দক্ষিণ ভারতীয় ফুড (South Indian Food) স্টল চালু করেছেন। এখন তাঁর রোজগার ভালোই। আর মেয়ের এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই পেশায় গাড়িচালকের কাজ প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন দেবীগড় এলাকার বাসিন্দা বাবা রাজু মিস্ত্রি।
চামেলি ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রী। সংস্কৃত (Sanskrit) নিয়ে স্নাতকোত্তরের পর বিএড কোর্স শেষ করেছেন। বহু চাকরির চেষ্টা করলেও তেমনভাবে ফল মেলেনি। বর্তমানে চাকরির এই দুর্মূল্যের বাজারে সংসার চালাতে বাবাকে সঙ্গী করেই মধ্যমগ্রাম (Madhyamgram) সোদপুর রোডের ধারে দিয়েছেন দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের স্টল। যে কোনও দিন বিকেল থেকে খাবার পাওয়া যাবে, রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা। আর মানুষজনও মশলাদার খাবার ছেড়ে স্বাস্থ্যকর সুস্বাদু ধোসা-ইডলির মতো দক্ষিণ ভারতীয় নানা পদের স্বাদ গ্রহণে বেশি আগ্রহী।
চামেলির ‘সাউথ জাইকা’ আসলে একটি ঠেলা গাড়ি। সেখানেই রান্না, পরিবেশন। এখন সন্ধে হলেই বহু মানুষের ভিড় জমছে এই মেয়ে ও বাবার দেওয়া দক্ষিণ ভারতীয় ফুড স্টলে। ধোসা ইডলির পাশাপাশি চাইলে মিলবে ম্যাগিও। দাম সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় অফিস ফেরত যাত্রী থেকে শুরু করে স্থানীয় মানুষজন এমনকি ছাত্রছাত্রীরা চলতি সন্ধেবেলা ভোজনের জন্য বেছে নিচ্ছেন এই খাবার।
এই স্টলের জন্য অবশ্য আক্ষেপ নেই এমএ-বিএড পাশ চাকরিপ্রার্থী চামেলি মিস্ত্রি। তাঁর কথায়, চাকরির বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে আসা প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে এখন সংসারের হাল ধরতেই এই স্টল দেওয়া। প্রতিদিন নিজের হাতেই সমস্ত কিছু সামলান পাশাপাশি অবশিষ্ট থাকা সময়ে করছেন চাকরির পড়াও। মধ্যমগ্রামের এই মেয়ের খাবারে যেমন হাত চাটছেন মানুষজন, তেমনই প্রশংসায়ও ভরিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই। সকলেই এখন চাইছেন কোনও একটি ভাল চাকরি হোক এই কৃতী ছাত্রীর। আর বাবা- মেয়ের এই স্টলে এসে দক্ষিণ ভারতীয় খাবার টেস্ট করার পাশাপাশি তাদের ব্যবহারে মুগ্ধ অধিকাংশই, সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্টেই তা বোঝা যায়।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.