পুজোর হাতে আর মাত্র কটা দিন। পার্লার-স্যাঁলোগুলিতে একেবারে সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়ছে। পুজো মন্ডপে নিজেকে আরও ঝকঝকে ভাবে তুলে ধরতে মাসের প্রায় শেষ দিকে মোটা টাকাও খসছে। তবে স্রেফ রূপ সজ্জার জন্য পাঁচ–দশ হাজার টাকা খরচ করতে না পসন্দ অনেকেরেই। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে এই কয়েকদিনে ভেষজ উপাদান খেয়ে বা ব্যবহার করে মনের মানুষের নজর কাড়তে পারেন আপনি। স্কিন-হেয়ার এক্সপার্ট সৌমজিৎ দত্ত–র কাছে সেই কথা শুনলেন সুমিত বিশ্বাস।
আমলকি, ঘৃতকুমারী, শিলাজিৎ-এর মতো বনৌষধি থেকে মেথির মতো মশলা কিংবা টমেটো, টক দই, ডাবের জল খেয়ে, ব্যবহার করে পুজোর আগে ত্বকে জেল্লা ফেরাতে পারেন। শুধু নিয়ম করে ব্যবহার করলেই এক পক্ষ কালের মধ্যেই অনেকটা উজ্বল লাগবে আপনাকে। মুখের যত্রতত্র কালো স্পট দূর করে ঝিলিক দেবে ত্বক। আসলে এই ভেষজ উপাদান সকলের ক্ষেত্রেই কার্যকর হবে।
আমলকিঃ এই ভেষজ ফলে ভিটামিন সি থাকে। সারা দিনে অন্তত একটা আমলকি মুখে তুলুন। শুধু ত্বক নয় আপনার মাথার চুলেরও নানান সমস্যা দূর করবে। মুখের কালো দাগ, ব্রন থেকে সহজেই রেহাই পাবেন। বলা যায় এই ফল আপনার ত্বকে ভারসাম্যের কাজ করে। অর্থাৎ রোদে ত্বক পুড়ে গেলেও তা বদলে দেবে। অনেকটাই সতেজ লাগবে আপনার মুখমন্ডল।
কস্তুরী হলদি: এই হলুদের গুন বহুবিধ। ভিটামিন সি–র পাশাপাশি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, কপার, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক রয়েছে। সকালে খালি পেটে খেলে এর উপকার মিলবেই। ত্বকে যে বলিরেখা পড়ে যায় তা থেকে দূর করে এই কস্তুরী হলদি।
মেথি: এই মশলার গুনাগুনও অনেক। এই মশলাতে ‘এসেনশিয়াল ওয়েল’ থাকে। যা বলিরেখা সরিয়ে আপনার যৌবনকে ধরে রাখে। আপনার বেড়ে যাওয়া বয়সকে বুঝতেই দেবে না। পুরুষ-মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই এর কার্যকারিতা দারুন। ফলে মেথি ভেজানো জল খেতে শুরু করুন আজ থেকেই। এই জল রক্তকে পরিষ্কার করে দেয়। প্রত্যেকটি অঙ্গকে সক্রিয় করে। প্রতিরোধ করে মধুমেহ ও বসন্ত রোগেরও।
ঘৃতকুমারী: এই পাতার জুস খুবই উপকারী। পেট পরিষ্কার রাখে। ফলে, ভেতর থেকে ত্বকে জেল্লা এনে দেয়। দূষন থেকে বাঁচায়। ব্রন দূর করে চেহারায় জেল্লা আনে। ত্বককে সবসময় ঝকঝকে রাখতে সাহায্য করে। লাবন্য নিয়ে আসে। এই ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার বহুবিধ গুন রয়েছে। তাই সকল স্কিন প্রোডাক্টেই আজকাল ঘৃতকুমারী যেন আবশ্যিক হয়ে গিয়েছে।
শিলাজিৎঃ এই লতা গুল্ম পুরুষ মানুষের শক্তি জোগায়। বাড়তি এনার্জি নিয়ে আসে। দূর করে ক্লান্তি। এখন শিলাজিৎ-এর ক্যাপসুল-ট্যাবলেট ছাড়াও বাজারে জুস পাওয়া যাচ্ছে। নিয়ম করে খেলে তার ফল পাবেনই। হ্যাঁ, পুজোর আগেই সেই ফল মিলবে। এই গাছগাছড়া পাকস্হলী পরিষ্কার রাখে। অত্যধিক ধূমপানে ঠোঁট কালো হয়ে গেলেও সেই কালচে দাগ দূর করে দেয়। এর ব্যবহারে খুব শীঘ্রই ঘুচবে মুখের তাম্রবর্ণ।
টমেটো, ডাবের জল ও টক দইঃ টমেটোতে ভিটামিন সি ও অ্যাসকরবিক অ্যাসিড থাকায় ত্বককে পরিষ্কার করে দেয়। বলা যায় ক্লিনজারের মতো কাজ করে। ফি দিন একটি টমেটো খেলে উপকার মিলবেই। তাছাড়া মুখে টমেটো ঘসতে পারেন। মেচেতা, ব্রন দূর করে দেবে।
ডাবের জল যেমন নিয়মিত খাবেন তেমনই তা শিশিতে রেখে মুখে ঘসলে মুখমন্ডলে জেল্লা নিয়ে আসবে। আর টক দই অকাল বার্ধক্য রোধ করে। গ্লুকোজ থাকায় এনার্জি বাড়ায়। দুপুরের আহারে টক দই ভীষনই উপকারী। দই-এ ল্যাকটোবেসিলাস ব্যাকটেরিয়া থাকায় শরীরে প্রবেশ করলে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করে। ফলে সারা দিন নানান খাবার খাওয়া থেকে যে জীবানু ঢুকছে সেই সমস্যা মিটিয়ে দেয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.