সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপনার সাজে চমক এনে দিতে পারে ‘রেশম শিল্পী’র শাড়ি। সিল্ক, মটকা বা তরসের উপর রকমারি সূক্ষ্ম কাজে তৈরি এই বস্ত্র প্রতিষ্ঠানের শাড়িতে নিজেকে সাজাতে পারেন আপনিও।
শাড়ির মান থেকে শুরু করে এর হরেক ডিজাইন- আর পাঁচটা বাজারচলতি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ‘রেশম শিল্পী’ তাই অনেকটাই এগিয়ে। অনেকের কাছেই তাই সিল্ক শাড়িই জন্য একমাত্র গন্তব্য ‘রেশম শিল্পী’!কী কিনবেন? কোন শাড়িতে নজরকাড়া হয়ে উঠবেন? সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারছেন না? এই সমস্যার সমাধান দিতেই সাজের সম্ভার নিয়ে হাজির রেশম শিল্পী। এক ঝলকে দেখে নিন রেশম শিল্পীর অভিনব চোখধাঁধানো কালেকশনস।
শিবোরি শাড়ি: রেশম শিল্পীর সুক্ষ্ম কাজের ‘নুই শিবোরী’ তসর সিল্ক শাড়ি গুলি তৈরি করা হয় উন্নত মানের তসর সিল্কের কাপড়ের উপর, এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে নুই শিবোরী নামক এক জাপানি পদ্ধতি ব্যাবহার করা হয়। এক্ষেত্রে রং করার আগে কাপড়ের কিছু অংশে সেলাইয়ের কাজ করা হয় যাতে ওই অংশগুলি রং করার সময়ে রং প্রতিরোধ করতে পারে তারপর পুরো কাপড়টি রং করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ার ফলস্বরূপ তৈরি হয় অত্যাধুনিক নকশার উৎকৃষ্ট শিবোরী শাড়ি। কখনো কখনো এই শাড়িগুলিকে আরো অত্যাধুনিক বানানোর জন্য এইগুলির উপর এমব্রয়ডারির কাজ ও করা হয়ে থাকে।শিল্পীর হাতে তৈরি অভিনব নকশার নৈপুণ্যে প্রতিটি শিবোরী শাড়ি হয়ে ওঠে অনন্য ও সাবেকিয়ানায় পরিপূর্ণ।
আজরাখ প্রিন্ট ও বাঁধনির কাজ করা মালবেরী সিল্ক শাড়ি: মূলত ব্লক প্রিন্টের এক অনন্য রূপ যা সাধারণত পাকিস্তানের সিন্ধ এবং ভারতের কচ্ছ জেলার আজরাখপুরে দেখতে পাওয়া যায়। এটি ব্লক প্রিন্টিং ব্যবহার করে তৈরি করা বিশেষ নকশার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
বাঁধনি শাড়ি: প্রাচীন টাই ও ডাই পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। বাঁধনি শাড়ি আজও পশ্চিম ভারতে খুব প্রচলিত। বাঁধনি শাড়ি কাপড়ের উপর ছোট ছোট গিঁট বেঁধে বিভিন্ন রঙে রঙিন করার একটি পদ্ধতি যার ফলে সুন্দর ও আধুনিক মানের নকশা তৈরি হয়। এই নকশা গুলিকে সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য ধৈর্য ও দক্ষতার প্রয়োজন হয়। শারদ সাজে নিজেকে অভিনব রূপ দিতে পারেন রেশম শিল্পীর আজরাখ প্রিন্ট ও বাঁধনির কাজ মালবেরি শাড়ির বিপুল সম্ভারে।
হাতে বোনা নকশার সিল্ক ও তসর শাড়ি: কাপড়ের উপর বোনা নকশার কাজ সাধারণত বিভিন্ন ধরনের তাঁত ব্যবহার করে করা হয়। বর্তমানে বেশিরভাগ নকশাই যন্ত্রচালিত বা কম্পিউটার নির্ভর জাকার্ড তাঁত দ্বারা তৈরি হয়। বুননের প্রেক্ষাপটে নকশাগুলি তৈরি করতে বিভিন্ন ধরনের সুতা ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে সুতোগুলির আকার, গঠন ও রঙের ব্যবহারের তারতম্যের উপর দিয়ে অত্যাধুনিক নকশা তৈরি করা হয়। রেশম শিল্পী কিছু আধুনিক নকশা তৈরি করেছে যা তাঁতিদের অভিনব বুননের কারুকার্য দ্বারা এক অনন্য রূপ ধারণ করেছে। রেশম শিল্পীর এই অভিনব নকশায় বোনা সিল্ক ও তসর শাড়ি পুজোতে আপনাকে করে তুলবে মধ্যমণি। তা হলে আর দেরি কেন? রেশম শিল্পীর সঙ্গে সেজে উঠুন অনন্য সাজে। হয়ে উঠুন অপরূপা।
‘রেশম শিল্পী’র পথচলা শুরু হয়েছিল ১৯৫৮ সালের গোড়ায়। বেঙ্গল কো-অপরেটিভ সোসাইটির ১৯৪০ সালের আইনের আওতায় সে বছরের ২৮ জানুয়ারি রেজিস্ট্রেশন হয়। মূলত সিল্কজাত বস্ত্রের বিপণন এবং বিক্রির উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ রেশমশিল্পী সমবায় মহাসংঘ লিমিটেড (পিবিআরএসএসএমএল) নামে প্রতিষ্ঠানটি। যাদের ব্র্যান্ডনেম হল ‘রেশম শিল্পী’। পিবিআরএসএসএমএল জানিয়েছে, শাড়ির মূল উপাদান হিসাবে বাংলার বিভিন্ন সমবায় সমিতি থেকে সিল্ক, মটকা বা তসরের মতো বস্ত্র সংগ্রহ করা হয়। বস্ত্র বাছাইয়ের কাজে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে গঠিত কমিটিও যোগ দেয়। এর পর তাতে নানা ডিজাইনের কাজের জন্য তা পাঠানো হয় সরকারের নথিভুক্ত প্রিন্টারদের কাছে। কাজে লাগানো হয় বিভিন্ন স্বনিযুক্ত প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কারিগরদেরও। তসর, ডাই করা সিল্ক, গরদ বা বালুচরী শাড়ির উপর তাঁদের হাতের কাজই নানা ডিজাইনের আকারে ফুটে ওঠে। বিভিন্ন শাড়ির বাজারদর ঠিক করতে মাথায় রাখা হয় কাঁচামাল, ডাই করার খরচ বা ডিজাইনের মান। সিল্কের সুতোর বাজারদরেও শাড়ির দাম ওঠানামা করে। সব ঠিকঠাক করে তবেই তা বিক্রির জন্য বাজারে ছাড়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.