অভিষেক চৌধুরী, কালনা: করোনা কেড়েছিল মুখের হাসি। মহামারী আবহে ম্লান হয়েছিল হাটের ঔজ্বল্য। কমেছিল বেচাকেনার পরিমাণও। তবে পুজোর আগেই ফিরছে সেই হারিয়ে যাওয়া আনন্দ। রবিবার সকাল থেকেই জমে উঠেছে কালনা ও পূর্বস্থলীর তাঁতের হাট। বাজারে এসেছে নতুন ধরনের শাড়িও (Saree)।
পুজো আসতেই ভিড় বাড়ছে কালনা (Kalna) ও পূর্বস্থলীর সরকারি ও বেসরকারি তাঁতের কাপড়ের হাটে। এদিন সকালেও পূর্বস্থলী-১ ব্লকের সমুদ্রগড়ের গণেশচন্দ্র কর্মকার তাঁত কাপড়ের হাটের এমন জমজমাট ছবি ধরা পড়ল ক্যামেরায়। শুধু বেসরকারি নয়, সরকারি তাঁতের হাটেও রেকর্ড বিক্রি হচ্ছে। ক্রমশ চওড়া হচ্ছে তাঁতি ও ব্যবসায়ীদের মুখের হাসি।
পুজোর আগে বাজারে ক্রেতাদের মন কাড়তে এসে গিয়েছে নতুন ধরনের শাড়ি। মিনাকারী থেকে নয়নতারা, সুতোর কাজ করা রকমারি ঢাকাই সহজে মন কাড়ছে ক্রেতাদের। রঙ বেরঙের সেলফ ঢাকাইয়ের পসরা সাজিয়েছে এই হাট। রয়েছে সুতোর নকশা কাঁটা শাড়িও। শুধু নতুন ধরনের শাড়ি নয়, চাহিদা রয়েছে সাধারণ তাঁত থেকে জামদানিরও। দামও খুচরো বাজারের চেয়ে অনেকটা কম। রয়েছে হাজার তাঁতির পসরা। ফলে বেছে নেওয়ারও সুযোগ অনেক বেশি।
করোনা আবহে বিক্রিবাটা তলানিতে ঠেকায় মাথায় হাত পড়েছিল তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা কালনা মহকুমার লক্ষাধিক শিল্পীর। যদিও এবার বেশকিছু ট্রেন চালু হওয়ায় দূরদূরান্তের মানুষজন শুধু এই কর্মকার হাটে-ই নয়, কালনার ধাত্রীগ্রামে ও পূর্বস্থলী ১ ব্লকের শ্রীরামপুরে থাকা সরকারি তাঁতের হাটেও ভিড় জমাচ্ছেন। সপ্তাহে দু’দিন খোলা থাকা এই তাঁতের বাজারের লাভও আগের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। ধাত্রীগ্রামের তাঁতের হাটে একদিনে ৩ লক্ষ ২৮ হাজার ৪৪০ টাকার শাড়ি বিক্রি হয়েছে। আর তাই পুজোর আগে আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রদীপ কুন্ডু, সুজিৎ চক্রবর্তী, ননী সূত্রধর নামের তাঁতি ও ব্যবসায়ীরা জানান, “গত বছরগুলিতে সেভাবে শাড়ি বিক্রি হয়নি বললেই চলে। স্বাভাবিকভাবেই এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। তবে একসপ্তাহ ধরে বিক্রি বেড়েছে। তাতে সকলেই আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন।” সমুদ্রগড় তাঁতের হাটের মালিক পক্ষের অনন্ত কর্মকার বলেন, “করোনাবিধি মেনেই হাটে কেনাবেচার কাজ চলছে। মাস্ক পরার জন্য মাইকিংও করা হচ্ছে। করোনার কারণে বিক্রির হার কমে গিয়েছিল। বর্তমানে সেই সংকট কাটিয়ে অনেকটাই বিক্রি বেড়েছে। ক্রেতাদেরও ভিড় বাড়ছে। বিক্রেতাদের মুখেও হাসি ফুটছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.