অভিরূপ দাস: দুয়ারে নববর্ষ। বৈশাখের প্রথম দিনে প্রখর রোদ। কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম প্রেমিকা মুছবেন কীসে? কমরেড শাড়ির আঁচলে? নাকি ‘খেলা হবে’-র খুঁটে। বান্ধবীর জন্য শাড়ি কিনতে ভিড় শ্যামবাজার, হাতিবাগান, গড়িয়াহাট, বড়বাজারে। ফি-বছরের মতো তসর-জামদানি-শিফন তো আছেই। ভোটের বাজারের শাড়ির দোকানে টক্কর দিদি-দাদার। একদিকে ‘খেলা হবে’ অন্যদিকে ‘কমরেড’ শাড়ি। উপচে পড়ছে আবদার, ‘‘আমাকে একটা এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের খেলা হবে শাড়ি দেখাবেন।’’ বুধবার দুপুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অগ্নিজিৎ রায় ছুটে এসেছেন বড়বাজারে। বামপন্থী প্রেমিকার জন্য লালপাড়ের কমরেড শাড়ি কিনতে।
পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। তাদের খেলা হবে শাড়ির রং অফ হোয়াইট। শাড়ির বডি জুড়ে শয়ে শয়ে ঘাসফুল। সবুজ পাড়ে সেই ঘাসফুল লোগো-ই বড় আকারে। বিক্রি হচ্ছে দেদার। বড় বাজারের বিক্রেতা রাহুল গুপ্ত জানিয়েছেন, কোনও শাড়ি পুরোপুরি সুতির নয়। কিছু ক্রেপ কিছু জর্জেট। শাড়ির মান অনুযায়ী দাম। খুব ভালো সুতির শাড়ি হলে দুহাজার টাকা পিস। আবার সবচেয়ে সস্তা ১৬০ টাকা প্রতি পিসের শাড়িও রয়েছে।
বিক্রেতাদের কথায়, অনেকেই একবার পরতে চান। ইউজ অ্যান্ড থ্রো ব্যবহারের জন্য সস্তায় শাড়ি মিলবে। আবার রেস্ত বেশি হলে ভালো মানের শাড়িও রয়েছে।
নতুনরা কিনছে? মুচকি হাসেন বিক্রেতা মহেন্দ্রকুমার গুপ্ত। ‘‘কেন কিনবে না? কি সিপিএম কি তৃণমূল, দুই দলেই এই প্রজন্মের প্রতিনিধি ভরপুর। তারা পরছে। তাদের দেখে এ প্রজন্মের অনেকেই কিনছে।’’ পয়লা বৈশাখের আগে বড়বাজার-শ্যামবাজারে শাড়ির দোকানের ক্রেতাদের উৎসাহ বলে দিচ্ছে, ভালোবাসার দলকে গায়ে জড়াতে পিছপা হচ্ছেন না আঠেরো থেকে ছত্রিশ।
শুধু নববর্ষ তো নয়। ভোট উপলক্ষেও বিক্রি হচ্ছে দুই দলের শাড়ি। তবে সেক্ষেত্রে কম দামেরই বিক্রি বেশি। শাড়ি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কম দামের শাড়িগুলো মূলত মিছিলের জন্য সংগ্রহ করছেন সমর্থকরা। সেসব শাড়ি বিক্রিও হয় পাইকারি দরে। বাম-কংগ্রেস জোটের শাড়িও খুঁজতে দেখা গিয়েছে কাউকে কাউকে। সবুজ লালে শাড়ি নেই? শাড়ি বিক্রেতা রোহিত বলছেন, অর্ডার আসেনি। এলেই বানানো হবে তেমন শাড়িও। সেক্ষেত্রে সবুজ বডিতে ফুটিয়ে তোলা হবে কাস্তে-হাতুড়ি-তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.