সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্তো থেকে লুচি-পরোটা, মিষ্টি… অনেক ক্ষেত্রেই রান্নায় একটা আলাদা মাত্রা যোগ করে ঘি। হেঁশেলের এক্কেবারে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ বললেও অত্যুক্তি হয় না। আর যাঁরা নিরামিষভোজী, তাঁদের কাছে তো ঘি একেবারে নয়নের মণি। তবে জানেন কি, হেঁশেলের এই অতি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ আপনার রূপচর্চার ক্ষেত্রেও আলাদা মাত্রা আনতে পারে?
প্রাচীনকালে শুধুমাত্র পুজো-আচ্চা কিংবা রান্নার উপাদান হিসেবেই নয়, বরং তখন রূপচর্চার সামগ্রী হিসেবেও ঘিয়ের যথেষ্ট সুখ্যাতি ছিল। আর হবে নাই বা কেন? ভিটামিন এবং ভাল ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ ঘি, যা সুস্থ এবং সুন্দর থাকতে একান্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু কীভাবে আপনার রূপচর্চায় ঘি (Beauty Tips) যোগ করবেন, বুঝতে পারছেন না তো? তাহলে বলে দেওয়া যাক।
অনেকেরই ধারণা যে ঘি ব্যবহার করলে চুল পেকে যায়, অ্যাকনে কিংবা ব্রনর মতো সমস্যা দেখা দেয়। একেবারেই না! এটা পুরোপুরি নির্ভর করছে আপনি কীভাবে ঘি ব্যবহার করছেন এবং কতটা ব্যবহার করছেন, তার উপর। তৈলাক্ত ত্বক হলে ঘি এড়িয়ে চলা ভাল। তবে কম্বিনেশন স্কিন বা রুক্ষ, শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রের এর জুড়ি মেলা ভার। চলুন, ঘি ব্যবহারের পদ্ধতিগুলো এবার জেনে নেওয়া যাক।
যাঁরা শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় ভোগেন কিংবা ত্বকের আর্দ্রতা হারান, ঘি এক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। কারণ, এতে সমস্ত ধরনের ভাল ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা ত্বকের কোষে আর্দ্রতা এনে দেয়। স্নান করার আধঘণ্টা আগে পরিমাণমতো ঘি নিয়ে সামান্য গরম করে নিন। ৫ মিনিট ভালভাবে গোটা শরীরে এই তরল ঘি মাসাজ করুন। দেখবেন হপ্তা খানেকের মধ্যেই আপনার ত্বকের রুক্ষভাব পালিয়েছে।
অনেকরই ঠোঁটের চামড়া রুক্ষ হয়, কালো ছোপ থাকে, কিংবা ফেটে যায়। এক্ষেত্রে প্রথমে ঘিয়ের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব করে নিন। এরপর মধু লাগান, উপকার পাবেন অব্যর্থভাবে।
ত্বককে আর্দ্রতা দিতে ময়শ্চারাইজার হিসেবেও ঘি কার্যকরী। সপ্তাহে ২-৩ বার মুখে ঘি লাগাতে পারেন। এতে ত্বক হয়ে উঠবে মসৃণ এবং নরম। সমপরিমাণে বিশুদ্ধ ঘি এবং জল মিশিয়ে নিন। ভালভাবে ঝাঁকিয়ে মেশাতে হবে। এই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে আলতো করে মাসাজ করুন। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও ঘিয়ের জুড়ি মেলা ভার! উপরন্তু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ফলে শুষ্ক-নির্জীব ত্বক হয়ে ওঠে কোমল এবং জেল্লাদার। কীভাবে পাবেন এমন গ্লোয়িং স্কিন তাই তো? কাঁচা দুধ, বেসন অথবা মুসুর ডালের সঙ্গে সমপরিমাণ ঘি মিশিয়ে ঘন একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। পরিষ্কার ত্বকে পুরু করে এই মিশ্রণ লাগান। ১৫-২০ মিনিট রেখে মিশ্রণ শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন।
ঘি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-এজিং উপাদানে সমৃদ্ধ। অকাল বার্ধক্যের হাত থেকে রক্ষা পেতে মোক্ষম দাওয়াই। সপ্তাহে ৩ দিন বিশুদ্ধ ঘি ত্বকে মাসাজ করুন। যাঁদের ত্বকে বলিরেখা কিংবা বার্ধক্যের ছাপ পড়ছে। তাঁরা নিয়মিত ঘি ব্যবহারে দারুণ উপকার পাবেন।
ডার্ক সার্কল কমিয়ে চোখের চারপাশের ত্বক সতেজ করে তুলতেও ঘিয়ের তুলনা নেই। চোখের চারপাশের ত্বক এতটাই কোমল হয় যে সঠিক যত্ন না নিলেই পাফড আইজ, শুষ্কতা, ফাইন লাইনস ইত্যাদিও সহজেই চলে আসে। তাই রাতে শুতে যাওয়ার আগে নিয়ম করে চোখের চারপাশে অল্প পরিমাণ ঘি লাগিয়ে আঙুলের সাহায্যে আলতো করে মাসাজ করে নিন। সকালে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিনের মধ্যেই উপকার পাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.