মা আসতে আর বেশি দেরি নেই। প্যান্ডেলে বাঁশ-দড়ি যেমন পড়ে গিয়েছে, তেমন ওয়ার্ড্রোবেও নিত্যনতুন ফ্যাশনের (Durga Puja Fashion 2023) পোশাকের সম্ভার বাড়ছে। একেক দিন একেকরকম ফ্যাশনে চমক দিতে হবে তো? হালফ্যাশনের হাঁড়ির খবর রাখতে চোখ রাখুন সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন-এর পাতায়।
সুমিত বিশ্বাস, বারাণসী: শুধু নববধূর সাজে গাম্ভীর্যতায় নয়। দেবী দুর্গার আগমনেও কলকাতার নামী স্বর্ণ বিপনীগুলি থেকে ট্র্যাডিশনাল বেল বুটির বেনারসি শাড়ির বরাত পেয়েছে বারাণসী। তাই প্রাচীন ওই শহর থেকে হাজার হাজার বেনারসি আসছে মহানগরের নামী বস্ত্র বিপনীগুলিতে। ঘিয়ে রঙের লাল পাড়ের বেল বুটি বেনারসি-ই পুজোর ট্রেন্ড। বেনারসের ঘরে ঘরে কুটির শিল্পের রূপ নেওয়া এই শাড়ি ওই শহরে মিলছে মাত্র ২০০ টাকাতেই। সর্বোচ্চ অবশ্য ২ লক্ষ।
উত্তরপ্রদেশের বেনারসের এই ঐতিহ্যবাহী শাড়ি এবার কলকাতার পুজোর বাজারেও আলাদা ছাপ ফেলবে। সূক্ষ্ম রেশম তন্তুর তৈরি, জটিল নকশায় সাজানো ভারী শাড়িতেই অষ্টমীর অঞ্জলি আলাদা নজর কাড়বে। বলছেন বেনারসি শাড়ি নিজের হাতে তৈরি করে উত্তরপ্রদেশ সরকারের হাতে পুরস্কার পাওয়া হস্ত শিল্পী বারাণসির অরমান আহমেদ। তাঁর কথায়, “কলকাতার নামী বস্ত্র বিপনীগুলি থেকে এবার দুর্গা পুজোয় আমরা প্রচুর বেনারসি শাড়ির বরাত পেয়েছি। এখান থেকে হাজার হাজার শাড়ি কলকাতা যাচ্ছে।
বেল বুটির ট্র্যাডিশনাল ডিজাইনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। লতা মঙ্গেশকরের মতো বিখ্যাত মানুষকে আমাদের মত প্রতিষ্ঠান নিয়মিতভাবে বেনারসি শাড়ি দিয়ে গিয়েছে। উনি বরাবর আমাদের কাছ থেকেই শাড়ি নিতেন।” তাঁর নেওয়া শাড়ির দুটি চেক ওই বেনারসি ফ্যাক্টরিতে এখনও সাজানো রয়েছে।
দেশজুড়ে কনের বিয়েতে সাজসজ্জার প্রধান অংশ বলেই পরিচিত এই শাড়ি। এমনকি গয়নার পরিপূরক হিসাবেও বলা হয়। সেই শাড়ি এবার আলাদাভাবে পুজোতে কলকাতায় জায়গা করে নেবে। বারাণসীর গৌরিগঞ্জের ফিলখানার বেনারসি কারখানার কর্মচারী সঞ্জয় গুপ্তা বলেন, “এখানে ২০০ টাকাতেও বেনারসি শাড়ি পাওয়া যায়। ২ লাখ টাকা পর্যন্ত এই শাড়ি আছে। এই শাড়ি সহজেই পরিষ্কার করা যায়। একেবারেই ইজি ওয়াশ। ২০০ টাকা, ২ হাজার, ৫০ হাজার টাকার বেনারসি পুজোতে কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে।”
নানা নকশায় সাজানো একটি শাড়ি তৈরি করতে ১৫ দিন বা এক মাস সময়ও লেগে যায়। বহু কারুকাজে কোন শাড়ি আবার তৈরি করতে ৬ মাসও সময় লাগে। সুতি বস্ত্র শিল্পের সমৃদ্ধ ক্ষেত্র এই বারাণসী। ১৬০৩ সাল নাগাদ দুর্ভিক্ষের সময় গুজরাট থেকে রেশম তাঁতিদের স্থানান্তরিত হওয়ার পর, ১৭ শতকে এই বারাণসীতে রেশম কিংখাব (ব্রোকেড ) বোনা শুরু হয়। এরপর ১৮ বা ১৯ শতকের সময় তা সমৃদ্ধি পায়। এখন বহু বাঙালি এই শহরের বেনারসি শাড়ির ফ্যাক্টরি গুলিতে কাজ করেন। ফলে এই শাড়ি তৈরিতেও বাঙালির নিপুন হাতের ছোঁওয়া রয়েছে। আর সেই বেনারসির কারুকাজেই এবার পুজোয় আলাদা ভাবে চোখ টানবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.