গৌতম ব্রহ্ম: ডেঙ্গু মোকাবিলায় কলকাতার অন্যতম ভরসা হয়ে উঠছে ড্রাগন ফ্রুট। নিউ মার্কেট থেকে লেক মার্কেট সর্বত্রই দেদার বিকোচ্ছে এই ‘ট্রপিক্যাল সুপারফুড’। চিকিৎসকরাও ঢালাও সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। বলছেন, ডায়াবেটিস ও প্রস্টেট ক্যানসারের মোকাবিলায়ও এই ফল বেশ কার্যকর।
ড্রাগন ফলের আদি বাড়ি মেক্সিকো, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায়। কিন্তু পরবর্তীকালে কম্বোডিয়া, থাইল্যাল্ড, ফিলিপিন্সেও চাষ শুরু হয় এই ফলের। এখন বাংলাদেশের নাটোর, পাবনা, বগুড়া, চট্টগ্রামেও প্রচুর ফলন হচ্ছে। শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্রপীঠের অধ্যাপক ডা. প্রদ্যোতবিকাশ কর মহাপাত্র জানালেন, “ড্রাগন ফলে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে। যা রক্তে অণুচক্রিকা বা প্লেটলেটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় এই ফল খুবই কার্যকর। আমাদের অনেক রোগী সুফল পেয়েছেন। পেঁপে পাতার রসের সঙ্গে এটাও অনেকে খাচ্ছেন। তাছাড়া এই ফলে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সহায়তা করে। তাই অ্যানিমিয়া রোগীদের জন্য ভাল।” যদিও ডেঙ্গুর ওষুধ হিসাবেই বেশি বিজ্ঞাপিত হচ্ছে এই ফল। বিক্রেতারাও এই বিষয়টা ‘হাইলাইট’ করছেন।
[সন্ধের ঝালমুড়িতেও ভেজাল! কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?]
বৈজ্ঞানিক নাম হাইলোসেরিয়াস আনডেটাস। পিতায়া নামেই অবশ্য বেশি পরিচিত এই ড্রাগন ফল। চিনারা এই ফলকে বলে ‘হুয়ো লং কুয়ো’, ভিয়েতনামে ‘থানা লে’ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াতে ‘বুয়া নাগা’। বিশেষজ্ঞরা জানালেন, ফণীমনসা গোত্রের এই গাছে ফুল ফোটে রাতে। দেখতে অনেকটা নাইট কুইন বা ব্রহ্মকমলের মতো। ফলটি দুই রঙের। লাল ও হলুদ। স্বাদও দু’ ধরনের। টক ও মিষ্টি। সাধারণত শাঁস সাদা। ভিতরে কালো জিরের মতো অংশ। প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলের ৫৫ গ্রামই খাওয়ার যোগ্য। দাম কেজি প্রতি ৩০০-৪০০ টাকার মধ্যে। পুষ্টিবিশারদরা জানিয়েছেন, এই ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ থাকে। ফলে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় ড্রাগন ফ্রুট খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এই ফলে থাকা ক্যারোটিন, লাইকোপেন প্রস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
[অল্পেতে ঝিমিয়ে পড়ছেন? তরতাজা থাকার জন্য এই কাজটি অবশ্যই করুন]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.