মণিদীপা কর: দোলে শিব দোলে না। কিন্তু নেশায় দোলে মানুষ। সে নেশা শিবের নেশা। সিদ্ধির নেশায় দেবকুলের সিদ্ধিলাভ হলেও বঞ্চিত থাকেন কামদেব মদন। কারণ সিদ্ধি হোক বা ভাং, নেশার প্রভাবে ব্যর্থ হয় যৌনমিলন।
সরস্বতী পুজো মানেই যেমন পাট ভাঙা শাড়ির গন্ধ। তেমনই দোল মানে নেশায় হাতেখড়ি। সে নেশায় বাবা-মাও খুব একটা আপত্তি করেন না। কারণ, নিপাতনে সিদ্ধের মতোই সে নেশা সিদ্ধির। যদিও অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের দাবি কিঞ্চিৎ ভিন্ন। ২০০৯ সালে করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যানাবিস অর্থাৎ, ভাং ও সিদ্ধির নেশায় কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের মতোই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যৌনজীবন। এই নেশায় আসক্তদের মিলনের সময় যেমন স্থায়ী হয় না, তেমনই তৃপ্তিও মেলে না। নেশার প্রভাবে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফলে নিজের ভাবনা চিন্তার উপর নিয়ন্ত্রণ হারান নেশাসক্ত। একইভাবে নিয়ন্ত্রণ হারায় বিভিন্ন জৈব ক্ষমতার উপর থেকেও। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মিলনকালকে দশ মিনিট স্থায়ী বলে মনে হয় আসক্তদের। ফলে সঙ্গী বা সঙ্গিনী এই স্বল্পস্থায়ী মিলনে তৃপ্ত হন না।
যৌনজীবনে অতৃপ্তির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গবেষণায় উঠে এসেছে, নিয়মিত সিদ্ধি, ভাং-এর প্রভাবে পুরুষ দেহে টেস্টোস্টেরন অর্থাৎ প্রধান যৌন হরমোন ক্ষরণ কমে যায়। ফলে পুরুষের কামোন্মাদনা কমে। মাঝে মধ্যে এই নেশা করলে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণে স্থায়ী প্রভাব না পড়লেও সাময়িকভাবে হলেও কমে যায় যৌনশক্তি। পুরুষদের পাশাপাশি নেশার প্রভাব পড়ে মহিলাদের যৌনাঙ্গেও। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে, গবেষকরা জানাচ্ছেন, মূলত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আঘাত করে সিদ্ধি ভাং-এর মতো নেশা। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস, পিটুইটারি গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেক্স হরমোন ক্ষরণের পরিমাণ কমে যায়। কমে যৌনশক্তি। শুধু ভাং সিদ্ধিই নয়, কমবেশি সব নেশার একইরকম প্রভাব পড়ে যৌনজীবনে। সেই তালিকায় রয়েছে গাঁজা, মদও। একাধিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, অ্যালকোহলের প্রভাবে পুরুষাঙ্গের স্বাস্থ্যহানি ঘটার পাশাপাশি কমতে থাকে স্পার্ম কাউন্টও। ফলে যৌনমিলনে তৃপ্তি থেকে যায় অধরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.