Advertisement
Advertisement

একসঙ্গে দু’জনকে ভালবাসা অপরাধ! কী মত মনোবিদদের?

নিজেকে প্রশ্ন করতে করতে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন সেখানেই স্থির থাকুন৷

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 28, 2016 6:07 pm
  • Updated:July 11, 2018 4:21 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্পর্কের তল পাওয়া ভার৷ নিখাদ-নিপাট সম্পর্কের ভিতরও কখনও কখনও ঘনিয়ে ওঠে অন্ধকার৷ মন চলে যায় অন্য কোনও দিকে৷ সেখানেই মেলে আর এক আলোর সন্ধান৷ কখনও আবার বিনা অন্ধকারেই এক সম্পর্ক থেকে মন ডানা মেলে অন্য সম্পর্কের দিকে৷ আর ঠিক এখান থেকেই শুরু অপরাধবোধের৷ একজনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও আর একজনকে ভালবাসার ভিতর অন্যায় দেখেন অনেকে৷ দ্বন্দ্বে পড়ে যন্ত্রণাদীর্ণ হন৷ অথচ এর থেকে পরিত্রাণ পান না৷

আসলে সম্পর্ক শব্দটিকে কোনও একছাঁচে ফেলা যায় না৷ আর তাই এক সম্পর্কের ভিতরে থেকেও অন্য সম্পর্কের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা যায়৷ মনোবিদদের মতও তাই৷ এ অসম্ভব কিছু নয়৷ কেননা ভালবাসাকে আমরা অনেক সময়ই কোনও এক ফ্লেভারের বলে ধরে নিয়৷ কিন্তু আদতে ভালবাসার স্বরূপ বেশ আলাদা ও জটিলও৷ কোনও স্থির সম্পর্কে থাকতে থাকতেই, অন্য কারও কোনও গুণ ভাল লেগে যাতে পারে৷ সেই অনুভূতির শরিক হতে গিয়েই সেই মানুষটির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা যায়৷

Advertisement

কখন এই প্রবণতা দেখা দেয়?

মনোবিদদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, যখন কেউ নিজেকে বেশি ভালবাসতে শুরু করেন তখনই এই প্রবণতা মাথাচাড়া দেয়৷ ধরা যাক, চাকরিক্ষেত্রে বা শারীরিকভাবে কেউ খুব সন্তোষজনক একটি জায়গায় রয়েছেন৷ জীবনের এই স্বস্তিই তাঁর অন্য অন্য আবেগগুলোকে উসকে দেয়৷ নিজেকেই আরও বেশি করে ভালবাসতে চান৷ আর তাই নিজের বিভিন্ন অনুভূতির মর্যাদা বা নানা আবেগের সহমর্মী মানুষ যাঁদের পান, তাঁদের সঙ্গেই একটি আত্মিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে চান৷ চেনা সম্পর্কের বাঁধা গতে তা গর্হিত বলে মনে হতে পারে৷ কিন্তু মানুষের মনের গতিবিধি এতই জটিল ও বহুমুখী পথে যে, এ ঘটনা প্রায়শই ঘটে৷

এটা কি অন্যায়?

এ নিয়ে নানামত সমাজে৷ বিশেষত নির্দিষ্ট সামাজিক কাঠামোর ভিতরে ভালবাসার এই পরিসর অনেকেই মেনে নেন না৷ শারীরিক বা মানসিক বহুগামিতাকে তাই স্বীকৃতি দেওয়া হয় না৷ যুক্তিগতভাবে একইসঙ্গে দু’জনকে ভালবাসা সম্ভব হলেও, মানসিক দিক থেকে তা বেশ কষ্টকর৷ বিশেষত উল্টোদিকের মানুষটির ক্ষেত্রে৷ কারও সঙ্গী অন্য একজনকে ভালবাসে, এটা মেনে নেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না৷ সেখান থেকেই বিবাদের শুরু৷ মনোবিদরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে সবার আগে স্বচ্ছ হওয়া উচিত নিজের কাছে৷ তারপর সঙ্গীর কাছেও৷

40071-27156

নিজেকে কী প্রশ্ন করবেন?

এই পরিস্থিতি নিজের জীবনে দেখা গেলে, আগে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে বাজিয়ে নেওয়া উচিত৷ প্রথমেই জেনে নেওয়া ভাল, আপনি নিজে ঠিক কী চান? যা চাইছেন সেটি আপনার বর্তমান সঙ্গীর থেকে পাচ্ছেন কি না?  দ্বিতীয়ত, নিজেকে চেনা৷ অর্থাৎ নিজে এক সঙ্গীতে সন্তুষ্ট না, অন্য কারও দিকে যেতে ইচ্ছে করছে সে ব্যাপারে আগে পরিষ্কার হয়ে নেওয়া উচিত৷ তৃতীয়ত, প্রশ্ন করুন, দু’জনকে একসঙ্গে ভালবেসে কি আদৌ কি আপনি সুখী হতে পারছেন? না তা জীবনে আরও জটিলতা বাড়াচ্ছে? এইরকম কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমেই নিজেই নিজেকে চিনতে পারবেন৷ আর মনোবিদের দ্বারস্থ হওয়ার রাস্তা তো খোলা থাকলই৷

দু’য়ের মধ্যে কীভাবে একজনকে বাছবেন?

একই সঙ্গে দু’জনকে ভালবাসেন৷ অথচ বেছে নিতে হবে একজনকেই৷ এই ধরনের পরিস্থিতিতে এরকমই সমীকরণের সামনে দাঁড়াতে হয় শেষপর্যন্ত৷ যদিও এ সমাধানের কোনও নির্দিষ্ট গাণিতিক সূত্র নেই৷ বরং নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন, যে যে আবেগ বা অনুভূতির জন্য অন্য অন্য মানুষের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন, তার মধ্যে, কোনটি আপনার জন্য বেশি জরুরি৷ কোনটি ছাড়া আপনি অপ্রাসঙ্গিক৷ সেটি ঠিক করতে পারলেই সঙ্গী বেছে নেওয়াও অসুবিধার হবে না৷ আপনার সংস্কৃতি অনুরাগকে কেউ তৃপ্ত করতে পারে, কিন্তু আপনার ঘোর অসুখের সময়ও তিনি পাশে এসে দাঁড়িবেন তো! আপনার শারীরিক সৌন্দর্যে কেউ বিবশ হতে পারেন, কিন্তু আপনার ৯০ বছর বয়সেও তিনি এতটাই মুগ্ধ থাকবেন তো! এইভাবেই ভাবতে ভাবতেই সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছে যেতে পারবেন৷

twopeople-main

কী করবেন না?

তবু সম্পর্কের বহুমাত্রিকতায় একই সঙ্গে দু’জনকে ভালবেসে ফেলাই যায়৷ কিন্তু মনোবিদরা এ ব্যাপারে কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ তা হল, কোনওভাবেই এ কথা আপনার সঙ্গীর কাছে গোপন করবেন না৷ নিজের কাছেও স্বচ্ছ থাকুন, সম্পর্ককেও স্বচ্ছ রাখুন৷

নিজেকে প্রশ্ন করতে করতে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন সেখানেই স্থির থাকুন৷ বারবার মত পাল্টালে থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে বই কমবে না৷

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement