সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাড়িতে শ্যাম্পু, কাপড় কাচার পাউডার বা ডিটারজেন্টের ব্যবহার কমবেশি সবাই করেন। দৈনন্দিন জীবনে এগুলি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জিনিস। কিন্তু জানেন কি পরোক্ষভাবে এই জিনিসগুলিই আপনার শরীরের ক্ষতি করে চলেছে? গবেষকদের মতে, শ্যাম্পু, কাপড় কাচার পাউডার বা ডিটারজেন্ট, কন্ডিশনার প্রভৃতি প্রস্তুতিতে যে ধরনের কেমিক্যাল বা রাসায়নিক ব্যবহার হয়, সেগুলি মানবদেহের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এমনকী এর ফলে পুরুষদের শরীরে শুক্রানুর পরিমাণ কমে যায়। পাশাপাশি মেয়েদের গর্ভধারণ ক্ষমতাও কমে।
জানা গিয়েছে, শ্যাম্পু, কাপড় কাচার পাউডার বা ডিটারজেন্ট, সাবান, কন্ডিশনার তৈরি করতে অ্যামোনিয়াম জাতীয় কিছু রাসায়নিক বা ‘কোয়াটস’ ব্যবহার করা হয়। এই ‘কোয়াটস’-ই আখেরে ক্ষতি করছে আমাদের। কীভাবে ক্ষতিসাধন করে এই কোয়াটস বা বিষাক্ত রাসায়নিকগুলি? সেটা জানতেই গবেষকরা কয়েকটি প্রাণীর উপর পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তাঁরা জানতে পারেন, এই ধরনের রাসায়নিকগুলি মূলত নিউরাল টিউবে আক্রমণ করে। এই নিউরাল টিউবের মাধ্যমেই মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ড তৈরি হয়। ভার্জিনিয়ার এডওয়ার্ড ভিয়া কলেজ অব অস্টিওপ্যাথেটিক মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক বলেন, ‘এই রাসায়নিকগুলি বাড়ি, হাসপাতাল, জনবহুল জায়গায় ব্যবহার করা হয়।’ তাঁর মতে, সেখান থেকেই মানবশরীরে ক্ষতির বীজ বোনা হয়ে যাচ্ছে। ‘বার্থ ডিফেক্টস রিসার্চ’ জার্নালে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মূলত দু’ধরনের রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়। ১. অ্যালকাইল ডাইমিথাইল বেঞ্জিল অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড এবং ২. ডাইডিসাইল ডাইমিথাইল অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড। এছাড়া বাড়িতে ব্যবহারের কারণে ইঁদুরের মধ্যেও কী প্রভাব পড়ে সেগুলিও খতিয়ে দেখতে পেরেছেন গবেষকরা। সেখানে দেখা গিয়েছে, রাসায়নিকের কারণে ইঁদুরের বাচ্চার মধ্যে জন্মের পর পরিবর্তন এসেছে। অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছে সেগুলি। এছাড়া কমেছে তাদের সন্তানধারণ ক্ষমতাও।
মানুষের মধ্যে শুধু গর্ভধারণ ক্ষমতা কিংবা শুক্রানু হ্রাস নয়, অপরিণত শিশুজন্মের ক্ষেত্রেও এই রাসায়নিকগুলি এক প্রকারভাবে দায়ী। এক্ষেত্রে গর্ভস্থ অবস্থায় শিশুদের বিকাশ ঠিকমতো হয় না। আবার অনেকসময় জন্মের পর দেখা যায় অপরিণত অবস্থায় শিশুর জন্ম হয়েছে। আর তাই বাড়িতে এখনই এই ধরনের জিনিস ব্যবহারের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.