ছবি: প্রতীকী।
অর্ণব আইচ: বিবাহিত ছেলের মাথায় ‘প্রেমের ভূত’। মদ্যপ অবস্থায় এক মহিলাকে বাড়িতে এনে তোলায় তুলকালাম। সহ্য করতে না পেরে অটোয় করে ছেলেকে থানায় নিয়ে যান বাবা। উত্তর কলকাতার (North Kolkata) বড়তলা থানায় বসিয়ে মধ্যরাতে ছেলেকে বোঝান পুলিশ আধিকারিকরা। ফের বাড়িতে এসে ভাঙচুর চালিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় সে। সোমবার সকালে ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় যুবকের ঝুলন্ত দেহ। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে রহস্য। প্রাথমিকভাবে পুলিশের মতে, আত্মঘাতী (Suicide) হয়েছেন ওই যুবক।
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর কলকাতার বড়তলা থানা এলাকার উল্টোডাঙা মেন রোডের বাসিন্দা প্রদীপ যাদবের বিয়ে হয়েছে আগেই। কিন্তু মাসকয়েক আগে এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে আলাপ হয় প্রদীপের। দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। রবিবার সন্ধেয় হঠাৎই ওই মহিলাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন প্রদীপ। বাবা পরেশ যাদবকে বলেন, ওই মহিলাই তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। এবার থেকে দ্বিতীয় স্ত্রীও বাড়িতে থাকবেন। সূত্রের খবর, প্রদীপের স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। তা নিয়েই বাড়িতে শুরু হয় অশান্তি। এর মধ্যে প্রচণ্ড মদ্যপানও করতে থাকেন যুবক।
বাবা প্রতিবাদ করলে গালিগালাজ শুরু করেন ছেলে। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। তখন প্রায় মধ্যরাত। বাধ্য হয়ে বাবা পুলিশে ফোন করে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে বড়তলা থানার দুই পুলিশকর্মী বাইকে করে বাড়িটিতে পৌঁছন। তাঁদের সাহায্যে পরেশবাবু তাঁর ছেলেকে একটি অটো করে বড়তলা থানায় নিয়ে যান। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, থানার মধ্যেই পুলিশকর্মী ও আধিকারিকরা যুবককে বোঝাতে থাকেন। ঘণ্টাদেড়েক পর যুবকের নেশা অনেকটাই কেটে যায়। তখন পুলিশের সহায়তায় বাবা ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন।
ওই মহিলার বাড়ি উত্তর কলকাতায়। রাতেই মহিলাকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন প্রদীপ। ভোররাতে ফের মদ্যপ অবস্থায় ফিরে আসেন বাড়িতে। বাড়িতে ঢুকেই ফের শুরু করেন গোলমাল। টিভি ও অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে শুরু করেন তিনি। পরিবারের লোকেরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। ফের পরেশবাবু পুলিশকে ফোন করেন। পুলিশ এসে বাড়িতে পৌঁছয়। পুলিশ আধিকারিকরা যুবককে গোলমাল করতে বারণ করেন। পুলিশ চলে যাওয়ার পরই ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন যুবক। সকাল ন’টা বেজে গেলেও দরজা না খোলায় পরিবারের লোকেরা ডাকতে শুরু করেন। সাড়াশব্দ না মেলায় দরজা খুলে পরিবারের লোকেরা ঘরের ভিতর ঢুকে দেখেন, সিলিং থেকে গলায় গামছা দিয়ে ঝুলছেন যুবক। খবর পেয়ে বড়তলা থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই মৃত্যুর ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.