অর্ণব আইচ: বাতানুকুল ঘরে বডি ম্যাসাজ করে দেবে ‘খুশি’, পোস্টারে এই বিজ্ঞাপনের সঙ্গে এক সুন্দরীর মুখের ছবি। নিচে যোগাযোগ করার জন্য দেওয়া মোবাইল নম্বরও। চাঁদনি চক (Chandni Chowk) মেট্রো স্টেশনের কাছে দেওয়ালে লাগানো এই পোস্টার দেখে আর লোভ সামলাতে পারেননি মধ্য কলকাতার বউবাজারের বাসিন্দা এক যুবক। ‘খুশি’র ম্যাসাজ পার্লারে যাওয়ার জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করতেই বিপত্তি। সুন্দরীর নরম হাতের শুশ্রূষা দূর অস্ত, তাঁকে একটি ভুয়ো ম্যাসাজ পার্লারে ডেকে যাবতীয় টাকা লুঠ করার অভিযোগ উঠল তিন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। প্রতারিত যুবক গিরিশ পার্ক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, কিছুদিন আগে ঘটেছে এই ঘটনাটি। বউবাজারের প্রিন্সেপ স্ট্রিটের বাসিন্দা ওই যুবক সুন্দরী ‘খুশি’র নামে ওই পোস্টারটি দেখে মোবাইল নম্বরটিতে ফোন করেন। এক ব্যক্তি ফোনের ওপ্রান্ত থেকে নিজেকে ‘খুশি’র ম্যাসাজ পার্লারের এজেন্ট বলে পরিচয় দেয়। তাদের ম্যাসাজ পার্লারে পুরো বডি ম্যাসাজ করা হয় বলে তাঁকে জানানো হয়। জানানো হয় দরদামও। ওই ব্যক্তি যুবককে গিরিশ পার্ক (Girish Park) মেট্রো স্টেশনের ২ নম্বর গেটে অপেক্ষা করতে বলে। সেখান থেকে তাঁকে ম্যাসাজ পার্লারে নিয়ে যাওয়ার কথা হয় উভয়ের মধ্যে। ঘটনার দিন গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনের নির্দিষ্ট গেটে অপেক্ষা করছিলেন যুবক। কিছুক্ষণ পর লাল রঙের একটি স্কুটি নিয়ে এক ব্যক্তি তাঁর কাছে আসে। স্কুটিতে উঠলে ওই ব্যক্তি তাঁকে সোনাগাছি তথা রামবাগান অঞ্চলের নীলমণি মিত্র স্ট্রিটের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। যুবককে জানানো হয়, ভিতরেই রয়েছে ম্যাসাজ পার্লার। যুবককে একটি ঘরের ভিতর বসতে বলা হয়। কিছুক্ষণ পর ঘরের দরজা খুলতে দেখা যায়। আর এখানেই ‘কাহানি মে টুইস্ট’।
‘খুশি’ নামের কোনও সুন্দরী তন্বীর বদলে ওই ব্যক্তিই হাজির হয় আরও দু’জনকে নিয়ে। রীতিমতো মারমুখী ওই ব্যক্তিরা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধস্তাধ্বস্তি শুরু হয় উভয়ের মধ্যে। তিনি প্রতিবাদ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। যুবকের দু’টি পকেট ঘেঁটে তারা ৭ হাজার ২০০ টাকা লুট করে নেয়। তাঁকে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তিনি ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনওমতে পালিয়ে যান। পুলিশকে যুবক জানিয়েছেন, তিনি স্কুটির নম্বর দেখেননি। কিন্তু স্কুটি ও অভিযুক্তদের দেখলে সহজে শনাক্ত করতে পারবেন।
জানা গিয়েছে, কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় দেওয়ালে লাগানো হচ্ছে এ ধরনের ম্যাসাজ পার্লারের বিজ্ঞাপন দেওয়া পোস্টার। কিন্তু ম্যাসাজ পার্লারের আড়ালে অপরাধের ছক কষেছে অপরাধীরা। অনেকেই প্রলুব্ধ হয়ে যোগাযোগ করার পর লুটপাট চালানো হচ্ছে তাঁদের উপর। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লোকলজ্জা ও ভয়ে কেউ অভিযোগ জানাতে চান না। তাই এই ধরনের পোস্টার বা বিজ্ঞাপন থেকে শহরবাসীকে সতর্ক করছে পুলিশও। পুলিশ এই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। নীলমণি মিত্র স্ট্রিটের ওই বাড়িটিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে পোস্টারে থাকা মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরেও তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.