অর্ণব আইচ: ভোটের আগে প্রকাশ্যে এল বিহার থেকে কলকাতায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র (Arms) পাচারের ছক। কখনও বাস, আবার কখনও ট্রেনে করে কলকাতায় এসে পৌঁছচ্ছে অস্ত্র। গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়ে মঙ্গলবার বাসে উঠে অস্ত্র পাচারকারীকে জালে আনল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (STF)। যাত্রীর ছদ্মবেশে আসানসোলগামী বাসে উঠে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করলেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ আকিব। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ৮ এমএম পিস্তল, একটি ওয়ান শটার, একটি রিভলভার, তিন ধরনের মোট ৮০ রাউন্ড বুলেট।
সম্প্রতি লালবাজারের এসটিএফের গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে, বিহার (Bihar) থেকে ফের কলকাতায় আসছে অস্ত্র ও প্রচুর বুলেট। যে বাসে চড়ে পাচারকারী সেসব নিয়ে কলকাতায় ঢুকেছে, আসানসোল থেকেই সেই বাসের উপর নজর রাখতে শুরু করেন গোয়েন্দারা। যাত্রী সেজে বাসে বসে ছিল পাচারকারী মহম্মদ আকিব। গোয়েন্দারাও যাত্রীর ছদ্মবেশে তার আশপাশের সিটেই বসেন। কলকাতায় বাসটি ঢোকার পর আকিব বাস থেকে নামার চেষ্টা করে। তার আগেই তাকে ধরে ফেলেন গোয়েন্দারা। তার ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় অস্ত্র ও বুলেট। জানা গিয়েছে, অস্ত্রগুলি ‘মুঙ্গেরি’ হলেও বুলেটগুলি আসল। এসটিএফ আধিকারিকরা বুলেটের প্যাকেটও উদ্ধার করেছেন।
এর আগে গার্ডেনরিচ এলাকা থেকে ৯০ রাউন্ড ৮ এমএম বুলেট উদ্ধার হয়েছিল। গ্রেপ্তার হয়েছে বউবাজারের ফিয়ার্স লেনের এক বাসিন্দা। লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছিলেন যে অস্ত্রের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় শুরু হয়েছে বুলেট পাচার। মুঙ্গেরের ‘মিস্ত্রি’রা কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলে বেআইনি কারখানায় এসে অস্ত্র তৈরি করলেও এখানে বসে বুলেট তৈরি করা সহজ কাজ নয়। তাই অস্ত্র পাচারকারীরা বিহার থেকেই বুলেট পাচার করছে কলকাতায়। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, তহবিল বাড়ানোর জন্য বিহার ও ছত্তিশগড়ের মাওবাদীরা চড়া দামে বিক্রি করে বুলেট। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তারা এজেন্ট মাত্র। পাচারচক্রের মাথারা রয়েছে বিহার ও কলকাতায়।
গোয়েন্দারা আরও জানতে পেরেছেন, ভোটের আগে কলকাতা ও এই রাজ্যে অস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে। তাই অস্ত্রের এজেন্টরা নিয়ে বিহার থেকে পাচার করছে অস্ত্র ও বুলেট। গোয়েন্দাদের ধারণা, ভোটের আগে অন্য এজেন্টদের দিয়ে অস্ত্র পাচারচক্রের মাথারা বিহার থেকে ফের অস্ত্র ও কাতুর্জ পাচারের চেষ্টা করতে পারে। বিহারে যে ‘অস্ত্র ভাণ্ডার’ রয়েছে, পরপর গ্রেপ্তারিতে তারই প্রমাণ মিলেছে। বিহারে তল্লাশি চালালে এই অস্ত্রভাণ্ডারের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন লালবাজারের কর্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.