অভিরূপ দাস: কোভিড (COVID-19) থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তারপরই হার্ট অ্যাটাক! একবার নয়, দু’বার। এমন ঘটনা অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটেছে। করোনা (Corona Virus) সংক্রমণ সেরে যাওয়ার পরও দুর্বলতা থাকছে অনেকের। কারও শুকনো কাশি, কারও বুকে ব্যথা কিংবা শ্বাসকষ্ট যাচ্ছে না মাসের পর মাস। আচমকা মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এই রহস্যের উত্তর খুঁজতে সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন বেলঘড়িয়ার অভিষেক।
অভিষেকের বাবা অপূর্ব ঘোষ করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেও মারা গিয়েছেন। বাবার সেই দেহ দান করলেন বেলঘড়িয়ার যুবক। তাঁর কথায়, আশা করছি আমার দেখাদেখি অনেকেই এগিয়ে আসবেন। এমন দেহের প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি করেই জানা যাবে কেন কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরে আচমকা হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। উত্তর পাওয়া গেলে, চিকিৎসকরা আগামীতে অনেককেই বাঁচাতে পারবেন।
মরণোত্তর দেহদান সংস্থা গণদর্পণের মাধ্যমেই বাবার দেহ দান করেছে অভিষেক। গণদর্পণের সম্পাদক শ্যামল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গণদর্পণের অন্যতম সদস্য পল্লব ঘোষের উদ্যোগে গণদর্পণ-এর সহয়তায় অপূর্ব ঘোষের মরদেহ আর জি কর হাসপাতালে অটোপসির জন্য দান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দান করা দেহের অটোপসি হবে।
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে করোনা আক্রান্ত ছিলেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা অপূর্ব ঘোষ (৬৯)। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে ৩ মে তাঁকে সেফ হোমে ভরতি করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। বাধ্য হয়ে তাঁকে গত ৪ মে মিন্টোপার্কের একটি নার্সিং হোমে ভরতি করা হয়। এখানে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। গত ১৯ মে তাঁকে কোভিডমুক্ত ঘোষণা করে নার্সিংহোম। কিন্তু শ্বাসকষ্টের সমস্যা মিটছিল না তাঁর। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরও স্যাচুরেশন বাড়ছিল না।
২৯ মে ফের তাঁকে আলিপুরের একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানেই ৮ জুন মঙ্গলবার তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। তাতেও অবস্থার উন্নতি ঘটেনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে মারা যান অপূর্ববাবু। এরপর থেকে মরদেহ হাসপাতালের মর্গেই ছিল। অভিষেকের কথায়, “বাবার দেহ আগুনে পুড়ে নষ্ট হতে দেব না। তা গবেষণায় কাজে আসুক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.