ফাইল চিত্র
অভিরূপ দাস: “দাদা, একটা কাজ পাওয়া যাবে?” এমন মিনতি যাঁর তিনি কোনও না খেতে পাওয়া যুবক নন। রাজ্যের অন্যতম সেরা বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়া। হন্যে হয়ে চাকরি খুঁজছেন। মোটা টাকা খরচ করে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েও চাকরি জুটছে না। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলররা একহাত নিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। গালভরা ডিগ্রি নিয়েও চাকরি মিলছে না এ রাজ্যে!
সিপিআই কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব জানিয়েছেন, একদিকে মেয়রের সরকার কর্মসংস্থানের গল্প দিচ্ছে। অন্যদিকে শহরের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া তার কাছে হাতে পায়ে ধরে কাজ চাইছে। সেও বুঝতে পারছে বেকার থাকাই এ রাজ্যের ভবিতব্য। এতেই পরিস্কার রাজ্যে কর্মসংস্থানের অবস্থা কেমন ভাঁড়ে মা ভবানী! মধুছন্দার দাবি, আপাতত রাজ্যে গ্রিন পুলিশ আর ১০০ দিনের কাজ ছাড়া আর কোনও কাজ নেই। তা পেতে গেলেও শাসক দলের সুপারিশ লাগে। কোনওরকম কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেনি এই সরকার। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াও বুঝতে পারছে শিক্ষাগত যোগ্যতা এ রাজ্যে চাকরি পাওয়ার মাপকাঠি নয়। আর তাই মেয়রের হাতে পায়ে ধরে কাজ চাইতে হচ্ছে।
চাকরিপ্রার্থী দক্ষিণ কলকাতার কুঁদঘাট এলাকায় থাকেন। চণ্ডীঘোষ রোডের অর্কদেব পাল গড়িয়ার নেতাজি সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার ছাত্র। মেধাবী ছাত্রের এমন অনুরোধ অবশ্য হাসিমুখেই সামলেছেন মেয়র। চাকরি চাওয়ার পরেই অর্ককে ফিরহাদ বলেছেন, “তুমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছো। চাকরি নিয়ে চিন্তা কোরো না। তোমরাই তো আগামী দিনে বাঁধ বানাবে, দেশের বড় বড় নির্মাণ কাজে ছাপ রাখবে।” এই প্রথম নয়। মেয়রের কাছে চাকরি চেয়ে ফোন আসা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি হুগলি থেকেও সুশান্ত প্রজাপতি নামে এক ব্যক্তি চাকরি চেয়ে দরবার করেছেন মেয়রের কাছে।
ফিরহাদ তাঁকে বলেছেন, এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকে নাম নথিভুক্ত করো। কাজ হয়ে যাবে। বাংলার কর্মসংস্থান নিয়ে একাধিক গর্ব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করেছেন, ফি বছর ৯ লক্ষ কর্মসংস্থান হয় এ রাজ্যে। মেয়রের কাছে চাকরির চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টিপ্পনি কেটেছেন বিজেপি নেতা, কাউন্সিলর বিজয় ওঝা। তাঁর কথায়, এই যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলা নাকি সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা। কিন্তু বাস্তব ছবি তো দেখা যাচ্ছে অন্য। আগে ভিন রাজ্য থেকে লোকে কাজের খোঁজে কলকাতায় আসতে। এখন কলকাতা থেকে কাজের খোঁজে পালাতে হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.