ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: কালীঘাটের পর এবার প্রগতি ময়দান। ফের শহরের বুকে চোর সন্দেহে এক যুবককে বেঁধে গণধোলাই। চার ঘণ্টা ধরে টানা মারধরের পর মৃত্যু হল ওই যুবকের। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জানিয়েছে, মৃত যুবককে ক্রমাগত লাথি ও ঘুসি মারা হয়েছে। তার ফলে ফুসফুস, যকৃৎ, প্লিহার মতো অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেহের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। কোনও ভারী বস্তু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাতও করা হয়। ক্রমাগত আঘাতের ফলেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে গণধোলাইয়ে খুনের অভিযোগে এখনও পর্যন্ত প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের ধারণা, এই খুনের পিছনে রয়েছে আরও কয়েকজন ব্যক্তি।
গত মাসেই কালীঘাটে একটি শপিং মলের কাছে চোর সন্দেহে এক যুবককে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত প্রায় আট ঘণ্টা ধরে ক্রমাগত মারধর করা হয়। গাছের সঙ্গে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়। তার পর মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। তারও আগে এনআরএস হস্টেলে কোরপান শাহ নামে এক যুবককে চোর সন্দেহে গণধোলাই দিয়ে খুন করা হয়। অভিযোগ ওঠে ডাক্তারি ছাত্রদের বিরুদ্ধে। ফের শহরে ঘটল এই ঘটনা।
[ আরও পড়ুন: সদ্যোজাত ‘মমতা’কে দেখতে হাসপাতালে মমতাজ, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ]
পুলিশ জানিয়েছে, বাইপাসের কাছে মঠেশ্বরতলা রোডে ঘটেছে এই ঘটনা। মিলনমেলার অদূরেই একটি বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে। সেই নির্মাণের জায়গায় থাকেন নিরাপত্তারক্ষী ও নির্মাণকর্মীরা। সোমবার সকালে এই ঘটনার সূত্রপাত। সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ সবে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। হঠাৎই আনুমানিক ৩৮ বছর বয়সের এক যুবককে ওই জায়গাটিতে ঢুকতে দেখা যায়। নির্মাণকর্মীদের অভিযোগ, ওই যুবক মোবাইল চুরি করতে ঢুকেছিলেন। হাতেনাতে তাঁকে ধরে ফেলেন কয়েকজন নির্মাণকর্মী। তাঁরা যুবককে নিরাপত্তারক্ষীর কাছে নিয়ে যান। প্রথমে চড়-থাপ্পড়। তার পর মারধর শুরু। হাতের সুখ করে নিতে শুরু করে কয়েকজন নির্মাণকর্মী ও নিরাপত্তারক্ষী। কেঁদে ক্ষমা চান যুবক। কিন্তু তাঁকে পুলিশে দেওয়ার বদলে একটি পিলারে বেঁধে ফেলা হয়। দিনের আলোয় চলে মার।
এই গণধোলাইয়ের খবর প্রথম পুলিশের কাছেও পৌঁছয়নি। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ একটি সূত্রে পুলিশ বিষয়টি জানতে পারে। মিনিট পনেরোর মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ। আধিকারিকরা যুবককে অচেতন অবস্থায় বন্ধনমুক্ত করে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর খুন প্রমাণিত হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে কয়েকজনকে শনাক্ত করে। তাদের মধ্যে ৬ জন সরাসরি খুনের অভিযুক্ত। তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[ আরও পড়ুন: বীরভূমের একটি বুথে ভোট পড়েছে ১০০ শতাংশ! অবাক রাজনৈতিক মহল ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.