অর্ণব আইচ: শহরে ফের ড্রাগ পাচারচক্রের পর্দা ফাঁস। হোটেল থেকে গ্রেপ্তার মাদক পাচারকারী। উদ্ধার হিটলারের জমানার মাদক ইয়াবা। ধৃতের থেকে পাওয়া গিয়েছে ১ হাজার নিষিদ্ধ ট্যাবলেট। উদ্ধার মাদকের বাজারদর প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা।
[তিনসুকিয়া গণহত্যার প্রতিবাদে অসমে চলছে বনধ, স্তব্ধ বরাক উপত্যকা]
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত পাচারকারীর নাম মুহিবুর রহমান (৪৬)। বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার তিলজলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। সেখানে একটি হোটেলে আশ্রয় নিয়েছিল অসমের বাসিন্দা ওই পাচারকারী। মণিপুর থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে কলকাতায় বিক্রি করার চেষ্টায় ছিল মহিবুর। তবে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাকে পাকড়াও করে পুলিশ। শহরের নাইট ক্লাব, বুজ পার্টিতে বিস্তর চাহিদা এই মাদকের। মাত্র ১৫০ টাকা একটি ট্যাবলেটের দাম। ওই কটি টাকা ফেললেই আসবে অন্য জগতের হাতছানি। মুহূর্তে পাড়ি দেওয়া যাবে ‘জন্নতে’। লোপ পাবে সমস্ত উদ্বেগ। এক অদ্ভুত অনাবিল প্রশান্তি নেমে আসবে মনে। পাখির পালকের মতো হালকা হয়ে যাবে শরীর। কিন্তু ক্ষনিকের আনন্দের জন্য তলিয়ে যেতে হয় অতল অন্ধকারে। এই মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে চরম পরিণতির দিকে এগিয়ে যায় ইয়াবার শিকার। মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের হাত ধরে এই নিষিদ্ধ মাদক ঢুকছে মণিপুরে। সেখান থেকে তা পাচার হচ্ছে কলকাতায়।
উল্লেখ্য, শহরে মাদক মিলছে সহজেই। শুধুমাত্র ‘ড্রাগ মিউল’রাই নয়, এই বিষ ছড়াচ্ছে ‘ডার্ক ওয়েব’। কলকাতায় কোকেন পাচার চক্রের তদন্ত শুরু করে এই বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাঁদের মতে, আফ্রিকা থেকে দিল্লিতে বিদেশি মাদক নিয়ে আসা হয়েছে ‘ডার্ক ওয়েব’-এর মাধ্যমে। এই পদ্ধতিতে পাচারের পিছনে যে ব্যক্তিটি রয়েছে, সে দিল্লির বাসিন্দা বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি বিমানবন্দরের বাইরে ২৫ গ্রাম কোকেন-সহ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় নাইজেরীয় যুবতী ওকুসান ক্রিস্টিয়ানা। তাকে জেরা করে কলকাতার মাদক চক্রের এজেন্ট তারই পরিচিত নাইজেরীয় দুই ফুটবলার ও নাইট ক্লাবের দুই ডিজে-র খোঁজ মিলেছে। তাদের সন্ধানে চলছে তল্লাশি।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোকেন, এলএসডি-র মতো মাদক পাচার করার জন্য এখন পাচারকারীদের বড় ভরসা ‘ডার্ক ওয়েব’। এই সাইটগুলির মাধ্যমেই মাদক পাচার সহজ মনে করে পাচারকারীরা। কারণ এই পদ্ধতিতে ক্রেতা ও বিক্রেতা কেউ কাউকেই চেনে না। শুধু সাইটের পক্ষে ক্রেতাকে কিছু প্রশ্ন করা হয়। ক্রেতার সম্পর্কে কিছু জানারও চেষ্টা হয়। সন্তোষজনক উত্তর পেলেই কেনাবেচা নিয়ে কথা হয়। কী ধরনের মাদক কতটা পরিমাণ ক্রেতা কিনতে চায়, তা জানতে চাওয়া হয়। টাকার লেনদেন হয় ‘বিটকয়েন’-এ। তার জন্য ক্রেতাকে অনলাইনে ‘বিটকয়েন’ কিনতে হয়। প্রাপ্য ‘বিটকয়েন’ হাতে পেলেই বিশেষ কুরিয়র সার্ভিসের মাধ্যমে চলে আসে বিদেশি মাদক।
[অযোধ্যায় বিশ্বের উচ্চতম রামের মূর্তি গড়তে চলেছে যোগীর সরকার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.