নব্যেন্দু হাজরা: বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে আরও ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ পেতে চলেছে রাজ্য। পঞ্চায়েতের কাজে ব্যয়ের জন্য এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই টাকা ঋণপ্রদানে কেন্দ্র প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে। পঞ্চায়েত দপ্তর সূত্রে খবর, আইএসজিপি বা ‘ইনস্টিটিউশনাল স্ট্রেনদেনিং অফ গ্রাম পঞ্চায়েত’ এই প্রজেক্ট চালুর জন্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ঋণদানে সম্মতি জানানো হয়েছে।
মূলত বিশ্বব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের’ অনুমোদন লাগে। কিছুটা সংশয় থাকলেও নবান্নের কাছে প্রাথমিকভাবে সম্মতি আশায় সংশয় অনেকটাই কেটেছে নবান্নের আধিকারিকদের। এই প্রজেক্টের তৃতীয় পর্যায়ে বা ফেস-৩ প্রকল্পের জন্য এই টাকা খরচ করা হবে। এই টাকা দিয়েই পঞ্চায়েতের আধুনিকীকরণ, কর্মীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, জিনিসপত্র কেনা-সহ পরিকাঠামো সংক্রান্ত একাধিক কাজ করা হবে। ২০২৯ সালের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কেন্দ্রের কাছে থেকে সম্মতি আসার পর ইতিমধ্যেই রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তর কেন্দ্রকে একটি লিখিত প্রস্তাব পাঠাচ্ছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। এই প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্যের পারফরম্যান্স খুব ভাল হওয়ায় বিশ্বব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে নতুন করে ঋণ দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ঘুরে গিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও।
২০১০ সাল থেকে এই আইএসজিপি প্রকল্প বা ‘ইনস্টিটিউশনাল স্ট্রেনদেনিং অফ গ্রাম পঞ্চায়েত’ এই প্রকল্প শুরু হয়। রাজ্যের মোট এক হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর ২০১৭ সালের মাঝামাঝি এই প্রকল্পেরই দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ করার জন্য অনুমোদন দেয় বিশ্বব্যাঙ্ক। এই প্রকল্পের অধীনেই রাজ্যের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে অনলাইন প্রশিক্ষণ ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে। আইএসজিপি প্রকল্প ভালভাবে রুপায়ন করার জন্য রাজ্য সরকারকে ‘হাইলি স্যাটিসফেক্টারির রেটিং’ও দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় বাজেট পেশ করা, অনলাইন টেন্ডারিং চালু করা, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, বিশ্বব্যাঙ্কের চুক্তি অনুযায়ী ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে এই প্রকল্পের তৃতীয় ফেসের জন্য কেন্দ্রের অনুমোদন আশা এবং বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে প্রাথমিকভাবে অর্থ পাওয়ার সবুজ সংকেত আশায় আপাতত রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে বলেই মনে করছেন নবান্নের কর্তারা। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা, গ্রামীণ সড়ক যোজনা, একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা অব্যাহত। সেই আবহে এই টাকার ঋণ দানের সম্মতি মেলায় স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তি মিলেছে নবান্নের কর্তাদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.