গোবিন্দ রায়: সাধারণ মানুষের সঙ্গে বঞ্চনা, দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন তাঁরাই। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য জোকার ইএসআই হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যেতেই এক মহিলা পার্থবাবুকে লক্ষ্য করে চটি ছোঁড়েন। যদিও তাঁর গায়ে আঘাত লাগেনি। আর সেটাই ছিল বিক্ষোভকারীর আক্ষেপ। মহিলার নাম শুভ্রা ঘোড়ুই। তিনি সেদিন স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, রাগ ছিল, মেরেছেন। শুভ্রার পথেই এবার হাঁটলেন আরেক বিক্ষোভকারী আরতি মিত্র।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC) প্রায় একই ঘটনার সাক্ষী রইল। টেট মামলায় তলব পেয়ে অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা সেখানে পৌঁছতেই তাঁকে দেখে ‘গরুচোর, গরুচোর’ বলে চিৎকার করে উঠলেন এক মহিলা। তারপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ভরিয়ে দিলেন প্রশংসায়। বিচারপতিকে ‘ভগবান’ বললেন ওই মহিলা। এককভাবে নিজেই প্রতিবাদ জানালেন তিনি।
টেটে পাশ না করেও বাড়ির কাছে স্কুলে চাকরি, স্কুলে নিয়মিত না গেলেও রেজিস্ট্রার খাতায় স্বাক্ষর – টেট দুর্নীতি মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) কন্যা সুকন্যার বিরুদ্ধে এমনই সব গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। মামলার শুনানিতে সুকন্যাকে তলব করে হাই কোর্ট। সেইমতো বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সুকন্যা কলকাতা রওনা হন। দুপুর নাগাদ এখানে পৌঁছে প্রথম চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে যান তিনি। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে হাই কোর্টে পৌঁছন। সেখানে তাঁকে দেখেই এক মহিলা ‘গরুচোর, গরুচোর’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন। যদিও নিরাপত্তারক্ষীদের কড়াকড়ি তিনি সুকন্যার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি।
জানা গিয়েছে, ওই মহিলার নাম আরতি মিত্র। তিনি নিজের অফিসের একটি মামলায় হাই কোর্টে এসেছিলেন। সুকন্যা দেখেই চিনতে পারেন। আর তারপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ”বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তো ভগবান। ওঁর ন্যায়বিচারের উপর আমরা বেঁচে আছি। জজ সাহেব সব ঠিক বোঝেন।” এরপর সুকন্যার প্রসঙ্গ তুলতে ফের সরোষে আরতি দেবী বলেন, ”ও তো গরুচোর। আবার বলব, গরুচোর গরুচোর গরুচোর।” প্রসঙ্গত, এর আগে অনুব্রত মণ্ডলকে ঘিরেও দুর্গাপুর এবং এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে এভাবেই ‘গরুচোর’ বলে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.