অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: সাত বছরের প্রেম। মাঝেমধ্যেই গেস্ট হাউসে একান্তে সময় কাটাতেও যেতেন রাকেশ ও নিক্কু। বিয়ের প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও সম্প্রতি সম্পর্ক ছাড়তে কার্যত মরিয়া হয়ে গিয়েছিলেন তরুণী? ঠিক কী কারণে বিচ্ছেদের কথা ভাবছিলেন নিক্কু? তা এখনও স্পষ্ট নয়। লেক গার্ডেন্স গুলি কাণ্ডের নেপথ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনই মূল কারণ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
বজবজ থানার ২ নম্বর বিদ্যাসাগর রোডের বাসিন্দা রাজগীর শাহের তিন ছেলে ও চার মেয়ে। তাঁদের মধ্যে নিহত রাকেশই ছোট ছেলে। প্রেমিকা নিক্কু কুমারী দুবে তাঁর বাড়ি থেকে ২ মিনিটের দূরত্বে থাকেন। নিক্কুর বাবা বজবজ মিলে কাজ করতেন। মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দিনমজুরের কাজও করেন। বর্তমানে স্ত্রীকে নিয়ে বিহারের আদি বাড়িতে থাকেন তিনি। কলকাতায় নিক্কু ও তাঁর ভাই থাকতেন। প্রতিদিনই নাকি কাজের নাম করে বাড়ি থেকে বেরতেন নিক্কু। তবে কোথায় কাজ করেন তিনি, সে বিষয়ে তাঁর পরিবারের কেউ কিছুই জানেন না।
তরুণের মায়ের দাবি, সাত বছরের প্রেম দুজনের। দুই পরিবারের সকলেই মোটামুটি তাঁদের সম্পর্কের কথা জানতেন। প্রাথমিকভাবে বিয়ের কথাবার্তাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নিক্কু সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন। তা নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াঝাটিও প্রায় লেগেই থাকত। বুধবার দুপুরে বাড়ির লোকজনকে জানিয়েই কলকাতায় আসেন তাঁরা। লেক গার্ডেন্সের গেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার জানান, দুপুর দুটো নাগাদ সেখানে আসেন তাঁরা। ৩০১ নম্বর ঘরে ওঠেন। ওই গেস্ট হাউসে আর কোনও অতিথি ছিলেন না সেই সময়। এর পরই দুজনের অশান্তি হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই গেস্ট হাউস থেকে চলে যাবেন বলেই জানিয়েছিলেন তরুণী। তাতেই রেগে যান রাকেশ। তাঁর কাছে থাকা নাইন এমএম পিস্তল থেকে তরুণীকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। তাঁর পায়ে গুলি লাগে। এর পর গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হন। কেয়ারটেকারের দাবি, এই প্রথমবার নয়। মাঝে মাঝেই তাঁরা আসতেন দুজনে। পুলিশ সূত্রে খবর, দেহ উদ্ধারের সময় রাকেশের পরনে ছিল শার্ট-প্যান্ট। তবে রাকেশ মদ্যপান করেছিল। কী কারণে দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্কে বিচ্ছেদ চাইছিলেন তরুণী, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.