Advertisement
Advertisement

Breaking News

Nimtala ghat

দারিদ্র দমাতে পারে না প্রতিভাকে, নিমতলায় জুতোর পাহারাদার প্রৌঢ়া নজর কাড়লেন রং-তুলিতে

ফুটপাথের এই শিল্পীর ছবি কি উঠে আসবে আর্ট গ‌্যালারিতে?

Woman guarding shoes at Nimtala ghat surprised everyone by drawing pictures। Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:October 14, 2022 11:57 am
  • Updated:October 14, 2022 11:57 am  

সুব্রত বিশ্বাস: প্রতিভাকে কখনও দমিয়ে রাখতে পারে না দারিদ্র। কেবল তা বিকশিত করার মানসিকতা থাকলেই হল। প্রতিভা প্রস্ফুটিত হতে পারে অনটনের মাঝেও। বিয়াল্লিশ বছর ধরে নিমতলা শ্মশান (Nimtala Ghat) সংলগ্ন ভূতনাথ মন্দিরের ঠিক সামনে তাঁকে সবাই দেখত ভক্তদের জুতো পাহারা দিয়ে রোজগার করতে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তাঁরই তুলির ছোঁয়ায় ফুটে উঠছে দেবলোকে বসবাসকারী দেবদেবীদের ছবি। নির্লিপ্তভাবে তিনি এঁকে চলেছেন ভোলানাথ, দেবী দুর্গার মুখমণ্ডল, দেবী সরস্বতী, গণেশ, কালী, তারা মায়ের ছবি। পেনসিল স্কেচের পর জল রংয়ের প্রলেপে দেবদেবী হয়ে উঠছে জীবন্ত। তাঁর ছবির তারিফ করছেন ভিখারি থেকে শবদাহে আসা শ্মশানযাত্রী। এমনকী ভূতনাথ মন্দিরে আসা ভক্তের দলের অনেকেই কিনতে চেয়েছেন ছবি।

জুতো পাহারাদারের তকমা হারিয়ে এখন শিল্পীর পরিচয় পাচ্ছেন তিনি। নাম শিখা ঘোষ। শিখা মাসি বলেই তাঁকে চেনে সবাই। হুগলির জাঙ্গিপাড়া ঘনশ‌্যাম বাটির শিবতলার বাসিন্দা তিনি। তবে বিয়াল্লিশ বছর ধরে বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে ভূতনাথের সামনে। ভক্তদের জুতো দেখভাল করে সামান‌্য রোজগার। সারাদিন কাজ করে রাতে বিশ্রাম মন্দিরেই। মাসে, দু’মাসে বাড়ি গেলেও থাকা হয় না। শিখাদেবীর কথায়, স্বামী, ছেলে থাকলেও তারা মনের মতো হয়নি। ছেলে কাজ ছেড়ে দিয়ে বাউন্ডুলে। যা তিনি মেনে নিতে পারেননি মন থেকে। চরম অনটনে আয়ের সন্ধানে বিয়াল্লিশ বছর আগে ভূতনাথের কাছে আসা। চার দশকের বেশি সময় ধরে তার পাদপ্রান্তে পড়ে থাকা। ভক্তদের পাদুকা সামলে আয় দিনে দুই থেকে আড়াইশো টাকা। কোনওক্রমে বেঁচে থাকার লড়াই আরও বেশি কঠোর হয়ে ওঠে যখন সন্তানের অধঃপতন হয়। মানসিক কষ্ট ভুলতেই গত তিন-চার মাস আগে তিনি শুরু করেন ছবি আঁকতে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ফিরল তিন বছর আগের দুঃসহ স্মৃতি, মাঝরাতে ফের বউবাজারে একাধিক বাড়িতে ফাটল]

তঁার কথায়, ”দুশ্চিন্তাকে দূরে সরাতে নিজেকে ছবি আঁকায় নিমগ্ন করি। এক শুভাকাঙ্ক্ষী পেনসিল দিয়ে মলিন কাগজে ছবি আঁকতে দেখে কিনে দেন আর্ট পেপারের খাতা, রং-তুলি, পেনসিল।” ছবির পর ছবি সবই দেবদেবীর। দেবভূমিতে আসা তীর্থযাত্রীদের অনেকেই ছবি কেনার আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে তিনি বিক্রি করেননি একটিও। তঁার কথায়, যিনি কাগজ, রং কিনে দিয়েছেন, তঁার অনুমতি নিয়েই তবে তিনি বিক্রি শুরু করবেন। কিন্তু কে সেই সুধীজন? কোথায় পাবে তঁাকে? তা জানেন না। তবে তাঁর অনুমতি না নিয়ে প্রতিভা বিক্রি করে টাকা তুলবেন না।

সেই মানুষটিরই সন্ধানে দু’একবার ছবি থেকে চোখ সরান। ছবির তারিফ করা মানুষের ভিড়ে যদি দেখা পান, এই আশায়। ছোটবেলায় পড়ার সময় কিছুটা সময় ছবি আঁকায় দিয়েছিলেন। তা দীর্ঘ অধর্শতক পরেও চেষ্টায় ফুটে উঠছে। প্রমাণ দিচ্ছে, অভাব প্রতিভা কাড়তে পারে না। বরং তাতে দগ্ধ হয়ে আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত হয়। হয়তো একদিন ফুটপাথ থেকে এই ছবি উঠে আসবে আর্ট গ‌্যালারিতে। এমনটা যে হবে না তা কে বলতে পারে।

[আরও পড়ুন: বেলদায় দিলীপকে ‘গোব্যাক’ স্লোগান তৃণমূলের, ‘MP দেখেনি, তাই দেখতে এসেছে’, কটাক্ষ সাংসদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement