Advertisement
Advertisement

Breaking News

ডাক্তারদের লিফটে কেন? রোগীর মাকে ২০ বার ওঠবোস করাল হাসপাতালের কর্মী

ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত লিফটম্যান।

Woman forced to do sit-ups for using lift in Uluberia hospital
Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:August 18, 2018 7:13 pm
  • Updated:August 18, 2018 8:54 pm  

সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: রোগীর পরিবারের সঙ্গে লিফট ম্যানের অভব্যতায় বিতর্কের মুখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, অসুস্থ বাচ্চাকে রেখে ওষুধ কিনতে লিফটে করে নিচে নেমেছিলেন মা ও এক আত্মীয়া। এই অপরাধে তাঁদের দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখল লিফটম্যান শেখ আব্বাস। শুধু আটকে রাখাই নয়, সেই সময় লিফটের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেয় ওই ব্যক্তি। এমনকী, তাকে না জানিয়ে লিফট ব্যবহারের জন্য দুই গৃহবধূকে ২০ বার করে ওঠবোসও করানো হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় শুক্রবার রাতে উত্তাল হয়ে উঠল উলুবেড়িয়া হাসপাতালের সিক নিউবর্ন বেবি ওয়ার্ড।

[ভুল চিকিৎসার জেরে মহিলার মৃত্যুর অভিযোগ, উত্তাল উলুবেড়িয়া হাসপাতাল]

জানা গিয়েছে, অসুস্থতা জনিত কারণে উলুবেড়িয়া হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভরতি রয়েছে বছর আড়াইয়ের আরিফা খাতুন। এদিন রাতে চিকিৎসকরা রুটিন চেকআপে এসে বেশ কয়েকটি নতুন ওষুধ লিখে দেন। সেই ওষুধ আনতেই আত্মীয়া সাবাইনা বেগমকে নিয়ে লিফটে চড়ে নিচে যান শিশুকন্যার মা সাহিনা বেগম। বাউরিয়ার বাসিন্দা সাহিনা বেগম আগে কখনও লিফটে চড়েননি। একা একা চলা ফেরা করারও অভ্যাস নেই। সেই সময় কর্তব্যরত লিফটম্যানেরও দেখা পাওয়া যায়নি। এদিকে খুব শিগগির ওষুধ দুটি মেয়েকে খাওয়াতে হবে। তাই ওয়ার্ডে উপস্থিত আর এক রোগীর আত্মীয়া চৈতালি হাজরার কাছ থেকে লিফট ব্যবহারের পদ্ধতি বুঝে নিয়ে তাঁরা নিচে নেমে যান। বলা বাহুল্য, উলুবেড়িয়া হাসপাতালে দুটি লিফট রয়েছে। একটি রোগীর পরিবারের জন্য অন্যটি শুধুমাত্র চিকিৎসক, হাসপাতালের কর্মী ও আশঙ্কাজনক রোগীকে নিয়ে আসার জন্য ব্যবহৃত হয়। বুঝতে পারেননি সাহিনা বেগম। তিনি চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট লিফটেই চড়ে বসেছিলেন। এটাই অপরাধ। ওষুধ নিয়ে ফেরার সময় তড়িঘড়ি সেই লিফটেই চড়েন। ততক্ষণে নিজের জায়গায় ফিরে এসেছে লিফটম্যান শেখ আব্বাস। চৈতালীদেবীর কাছে সবটা শুনে মারাত্মক রেগে যায় বলে অভিযোগ। প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই সংশ্লিষ্ট লিফটটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ওই অবস্থায় আলো বাতাসহীন লিফটে বেশ কিছুক্ষণ আটকে ছিলেন দুই গৃহবধূ। তারপর চৈতালিদেবীর অনুনয় বিনয়ে দরজা খুলে দেয় শেখ আব্বাস। অন্ধকারে আটকে থেকে ততক্ষণে দিশেহারা দুই গৃহবধূ। বাইরে বেরিয়ে এসে দু’জনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। অভিযোগ, তাতেও শান্তি হয়নি লিফটম্যানের। দুই মহিলা চিকিৎসকদের জন্য ব্যবহৃত লিফটে চড়েছেন। শাস্তিস্বরূপ তাঁদের ২০ বার করে কান ধরে ওঠবোস করায় অভিযুক্ত শেখ আব্বাস। রাতে হলেও শিশু বিভাগের বাইরে ইতিউতি রোগীর পরিজনরা দাঁড়িয়েছিলেন। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন সকলেই। অপমানে ততক্ষণে মাটির সঙ্গে প্রায় মিশে গিয়েছেন দুই গৃহবধূ। উত্তেজিত পরিজনরা প্রতিবাদ শুরু করতেই বেগতিক বুঝে পালিয়ে যায় শেখ আব্বাস।

Advertisement

[লড়াই শেষ, ফুটন্ত ভাতের হাঁড়িতে ফেলার ৫ দিনের মাথায় মৃত্যু একরত্তির]

বিক্ষুব্ধ পরিজনদের অভিযোগ, উলুবেড়িয়া হাসপাতালে অনিয়মের শেষ নেই। মাঝেমধ্যে শিশু চুরিরও ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে খবর থাকলেও কোনও কঠোর ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, অসুস্থ শিশুর মা লিফটে চড়েছেন বলে অপমান করল লিফটম্যান। এই ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা হাসপাতাল চত্বর। রাতে ওই লিফটম্যানের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া না হলেও তার বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাবেন সাহিনা বেগম। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুটছেন রোগীর পরিজনরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement