ছবি: প্রতীকী
গোবিন্দ রায়: আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে তল্লাশির নামে মহিলা বন্দিদের ‘শ্লীলতাহানি’। রাজ্যে জেলবন্দি মহিলাদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় এমন বিস্ফোরক অভিযোগ শুনে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। জেলে মহিলা বন্দিদের ঢোকা বেরনোর পথ আলাদা করার নির্দেশ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য প্রশাসনকে আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়েছে।
শুক্রবার মামলার শুনানি চলাকালীন আদালত বান্ধব জানান, “রাতে আদালত থেকে জেলে ঢোকার জন্য একই রাস্তা ব্যবহার করতে হয় মহিলা বন্দিদের। কোনও মহিলা কারারক্ষী থাকেন না। প্রভাবশালী পুরুষ জেলবন্দিরাই থাকে। সেই সুযোগে তল্লাশির নামে শ্লীলতাহানি করা হয় তাঁদের।” এমন বিস্ফোরক অভিযোগ শোনার পরই অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বিচারপতি তড়িঘড়ি নির্দেশ দেন মহিলা বন্দিদের ঢোকা বেরনোর রাস্তা আলাদা করতে হবে। রাজ্য এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ করল, আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হয়। ওইদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি।
এছাড়া রাজ্যকে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করতে হবে কোথায়, কত মহিলা বন্দি রয়েছেন। একটি কমিটি গঠনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটির সদস্যদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর জেলগুলি পরিদর্শন করতে হবে। জেলগুলি সংস্কারের কথাও বলেন বিচারপতি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “জেলগুলিকে সংশোধনাগার বলার মূল কারণ যে বন্দিদের জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে দিতে হবে। সেজন্য জেলগুলিতে বিভিন্ন সংস্কৃতিমূলক এবং কর্মসংস্থানমুখী বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। জেলে মিউজিক থেরাপি এবং নাচ-গানের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একজন কুখ্যাত বন্দি মুক্তি পেয়ে বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী তৈরি হয়েছেন এরকম উদাহরণ রয়েছে এই রাজ্যে। সে ব্যাপারে রাজ্যকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।”
উল্লেখ্য, আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ কিছুদিন আগে একটি রিপোর্টে দাবি করেন, বাংলার মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে ১৯৬টি শিশুর জন্ম দিয়েছেন বন্দি মহিলারা৷ যা নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন তৈরি হয়ে যায়। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট সব রাজ্যের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে। রাজ্যের সংশোধনাগারের তথ্য চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.