কলহার মুখোপাধ্যায়: বাড়িতে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে গিয়েছিল শরীরের প্রায় ৯৪ শতাংশ। রোগীর সুস্থতা নিয়ে ধন্দে ছিলেন খোদ চিকিৎসকরা। তবে বাইপাসের ধারে বেসরকারি নার্সিংহোমের বেডে শুয়ে যমের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছিলেন তিনি। সপ্তাহখানেকের লড়াইয়ে হার মানলেন কেষ্টপুরের বাসিন্দা পুলিশকর্মীর স্ত্রী। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ওই নার্সিংহোমেই মারা যান তিনি। তবে ঠিক কী কারণে ওই পুলিশকর্মীর বাড়িতে বিস্ফোরণ হল, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা।
কলকাতা পুলিশের ইন্সপেক্টর দেবাশিস রায়। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত দশটা নাগাদ শ্যালককে সঙ্গে নিয়ে কেষ্টপুরের ফ্ল্যাটে ঢোকেন তিনি। তাঁর স্ত্রী স্বাতী রায় সেই সময় রান্নাঘরে ছিলেন। আচমকা বিকট আওয়াজ শুনতে পান তাঁরা। ছুটে গিয়ে দু’জনে দেখেন, রান্নাঘরে দাউদাউ করে জ্বলছেন স্ত্রী। জল দিয়ে নিজেরাই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কোনওক্রমে আগুন নিভিয়ে স্বাতীকে বাইপাসের ধারের এক নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন শরীরের প্রায় ৯৪ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে তাঁর। সেখানে সপ্তাহখানেক ভরতি থাকার পরই বৃহস্পতিবার সন্ধেয় মারা যান স্বাতী।
ঘটনার পর প্রায় সপ্তাহখানেক কেটে গেছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও অজানা। রান্নাঘরের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটলেও অক্ষত ছিল গ্যাস সিলিন্ডার, চিমনি, জলের মেশিন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ফ্ল্যাটের বাকি তিনটি ঘরে লক্ষ্য করা গিয়েছে তাণ্ডবের চিহ্ন। সেক্ষেত্রে এই ঘটনাকে খুব একটা স্বাভাবিক বলে মানতে নারাজ তদন্তকারীরা। এছাড়াও নিহত স্বাতীর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘটনা ঘটার বহুক্ষণ পর থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। নিজে একজন পুলিশ ইনস্পেক্টর হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে এই কাজটি করলেন, সেই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে। যদিও মৃত্যুশয্যায় স্বাতী দাবি করেছিলেন, গ্যাস জ্বালাতে গিয়েই বিপত্তি ঘটেছে। তবে তাঁর দাবির আদৌ সত্যতা রয়েছে কি না, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীরা ভেবেছিলেন স্বাতী সুস্থ হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হয়তো সামনে আসবে আসল ঘটনা। কিন্তু জীবনযুদ্ধে হার মেনেছেন স্বাতী। তাই ঘটনার জট খুলতে বিকল্প উপায়ের ভাবনায় তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.