অভিরূপ দাস: প্রিয় দল আর্জেন্টিনার ম্যাচ বলে কথা। সোমবার বিকেলে দোকান থেকে বাঁশি কিনতে গিয়েছিল সাত বছরের শিশু। তা যে এমন বিপদ ডেকে আনবে কে জানত। বাঁশি পরখ করতে গিয়েই বিপত্তি। সটান ঢুকে যায় গলার ভিতের। শ্বাসনালী বা ব্রঙ্কাসে আটকে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। শেষমেশ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগে রিজিড ব্রঙ্কোস্কোপি করে বার করা হয়েছে বাঁশিটি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বছর সাতেকের শিশুটির নাম শাহবুল। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার হোগলায়। সোমবার বিকেলবেলা ফুটবল ভক্ত খুদে শাহবুল বাঁশি কিনতে গিয়েছিল। আচমকা বাজাতে গিয়েই বিপত্তি। মুখ ফসকে গলার ভিতরে ঢুকে যাওয়ার পরেই প্রাণ যায় যায় অবস্থা। বাড়ির লোকজন হতবাক। কাশি হলেই মুখ থেকে বেরোচ্ছে বাঁশির শব্দ। খাওয়া দাওয়াও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সইফুদ্দিন তড়িঘড়ি ছোট ছেলেকে নিয়ে যান ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। সোমবার সারারাত সেখানে ছিল শাহবুল। বের করা যায়নি বাঁশি।
মঙ্গলবার সাত বছরের শিশুকে নিয়ে আসা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের আউটডোরে। অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় বলেন, “শিশুটির কষ্ট হচ্ছিল। আমরা তাই দেরি করিনি। দ্রুত সিটি স্ক্যান করে বাঁশিটার অবস্থান দেখে নিয়েছিলাম। ব্রঙ্কাসের ডানদিকে আটকে ছিল তা।” সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপচার করা হয়। ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় ছাড়াও ওটিতে ছিলেন ডা. মৈনাক দত্ত। অ্যানাস্থেটিস্ট হিসাবে ছিলেন ডা. শুক্লা বন্দ্যোপাধ্যায়। রিজিড ব্রঙ্কোস্কোপি করে বের করা হয় বাঁশিটিকে।
পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন বাঁশি গিলে ফেলার পরেই শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল বাচ্চাটির। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাঁশিটি মুস্তাকিমের শ্বাসনালিতে গেঁথে থাকার কারণেই তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। অস্ত্রোপচারে দেরি হলে বাঁশির খোঁচায় শ্বাসনালি ফুটো পর্যন্ত হয়ে যেতে পারত। কিন্তু কী এই রিজিড ব্রঙ্কোস্কপি? ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “এই পদ্ধতিতে শ্বাসনালিতে শক্ত নল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নলের মাথায় থাকে একটি আলো। সেই আলোতেই দেখা যায় ডানদিকের ফুসফুসে আটকে বাঁশিটি। ফরসেপ দিয়ে টেনে বের করা হয় বাঁশিটিকে। আপাতত সুস্থ সাত বছরের শিশু।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.