সন্দীপ চক্রবর্তী: ৩ মে’র পর কি ফের বাড়তে পারে লকডাউনের সময়সীমা? করোনা মোকাবিলায় কি ফের লকডাউন নিয়ে নতুন কোনও দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি? সোমবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে মোদির বৈঠকের পর নতুন করে সেই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে। তবে লকডাউন নিয়ে যা-ই সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক না কেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, রাজ্যে ২১ মে পর্যন্ত সবকিছু মেনে চলা হবে। কোনও ছাড় মিলবে না।
এদিন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা রাজ্যের করোনা সংক্রান্ত খতিয়ান তুলে ধরে বুঝিয়ে দিতে চান, বাংলা এই লড়াইয়ে সঠিক পথেই এগোচ্ছে। আর যাতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাকে করোনা মুক্ত করা যায়, তার জন্যই বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা বিস্তারিত জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ২১ মে কোন কোন দিকে বেশি নজর দেওয়া হবে, কোন বিষয়েই বা মিলবে ছাড়? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১. করোনা সংক্রমণের হার অনুযায়ী রেড, অরেঞ্জ, গ্রিন- এই তিন ভাগে এলাকাগুলিকে ভাগ করা হয়েছে। যেখানে সংক্রমণের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, সেটি রেড জোন। আর এই রেড জোনকেই বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। এই এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে না বেরতে আবেদন জানান তিনি। বলেন, কোনও প্রয়োজন হলে বা বাজার এনে দিতে হলে যেন পুলিশকে জানানো হয়। তারাই ব্যবস্থা করবে।
২. এখন থেকে কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হন কিংবা বাড়ির কারও শরীরে যদি এই মারণ ভাইরাস বাসা বাঁধে, তাহলে অন্যত্র না গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকারই পরামর্শ দিচ্ছেন মমতা। তিনি বলেন, “যদি থাকার মতো জায়গা থাকে, তাহলে আক্রান্ত হলে বাড়িতেই আইসোলেশনে থাকুন। কারণ সেটা অত্যন্ত সুরক্ষিত জায়গা। হাসপাতাল বা অন্য কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে গেলে ঝুঁকি আরও বাড়ে। তবে বিষয়টা সরকারকে জানাতে হবে। সরকার একটা গাইডলাইন তৈরি করে দেবে, যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।”
৩. ২১ মে পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে আগের মতোই সরকারি অফিসে কাজকর্ম চলবে। স্কুল-কলেজ যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনই থাকবে। আরও কিছু অফিস খোলা হতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে অফিস খুললেও সমস্যা হবে না, তা দেখা হবে।
৪. করোনা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে নজর রাখতে কোভিড ম্যানেজমেন্ট ক্যাবিনেট কমিটি তৈরি করা হল। যার চেয়ারম্যান নিযুক্ত হলেন অমিত মিত্র। থাকবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ও ফিরহাদ হাকিম। এছাড়া কমিটিতে রাখা হচ্ছে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও স্বাস্থ্যসচিবও।
৫. শুধু অত্যাবশ্যকই নয়, অনাবশ্যক সামগ্রীরও এবার রাজ্যে হোম ডেলিভারির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। যাতে বাড়ি বসেই মানুষ সব জিনিস পান, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।
৬. ছোট দোকানগুলি সব খোলা হবে কি না, তা কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানতে পারলে জানানো হবে। তবে ২১ দিনের মধ্যে যে জায়গাগুলিতে কোনও নতুন কেস হয়নি, সেসব এলাকায় দোকান খুলে দেওয়া হবে।
৭. মুখ্যমন্ত্রী জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ রাখা, ট্রেন পরিষেবা এবং আন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার দাবি জানাবেন তিনি। রাজ্যের মধ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রে খুব প্রয়োজন হলে অনুমতি দেওয়া হবে। তবে সেক্ষেত্রে রাজ্যকে জানাতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.