ছবি: প্রতীকী
রাহুল রায়: আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নতুন করে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা বা টেট নেওয়া হবে। শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অ্যাডহক কমিটির বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রের খবর। পরীক্ষার দিনক্ষণ ঠিক করতে খুব শীঘ্রই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠক হবে বলেও জানা গিয়েছে। তবে চলতি বর্ষের টেট পরীক্ষা নেওয়ার আগে ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা তথা টেট-এর সম্পূর্ণ মেধাতালিকা নম্বর বিভাজন-সহ প্রকাশ করতে হবে। এদিন সংশ্লিষ্ট এক মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।
অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে তাঁকে অপসারণের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacha। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছেন, ‘‘এই বছরের মধ্যেই টেট নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরীক্ষার দিন এখনও ঠিক হয়নি। শিক্ষা দপ্তরের পরামর্শ নিয়ে চূড়ান্ত দিন ঠিক করব এবং তারপরই বিজ্ঞপ্তি জারি করব।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের টেটের মেধা তালিকার ভিত্তিতে ২০১৬ সালে ৪৩ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। পরবর্তী ধাপে ২০২০ সালে ১৬ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়। দুই দফায় মোট প্রায় ৫৯,৫০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হয়। এই নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। শুক্রবার সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে পর্ষদের তরফে ওই তালিকা দিতে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়। তার প্রেক্ষিতে বিচারপতির নির্দেশ, নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যেই তালিকা প্রকাশ করুন। মামলাকারী সৌমেন নন্দী, রমেশ মালিদের তরফে আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, ফিরদৌস শামিম ও বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়দের অভিযোগ ছিল, ওই বছর টেটের নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় প্রথমদিকে নাম থাকা সত্ত্বেও তাদের টপকে পিছন থেকে নিয়োগ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ নিয়মবিরুদ্ধ। নিয়োগ বেনিয়ম নিয়ে তাঁদের দাবি, ওই বছর যে দুই ধাপে নিয়োগ হয়েছিল, তার নম্বর বিভাজন-সহ সম্পূর্ণ মেধাতালিকা প্রকাশ করা হোক।
গত জুন মাসেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলির কাছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়, ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দিয়ে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড ও সমস্ত শংসাপত্র জমা করতে হবে। চাকরিপ্রাপকদের নিয়োগপত্র এবং ইন্টারভিউ ও কাউন্সেলিংয়ের চিঠিও জমা করতে বলা হয়। তার প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ মেধাতালিকা প্রকাশ করতে বলেছিল হাই কোর্ট। কবে সেই তালিকা তারা প্রকাশ করতে পারবে তা-ও পর্ষদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার নম্বর বিভাজন-সহ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সেই মেধাতালিকা প্রকাশ করতে বলল আদালত। এখন কর্মরত ওই টেটের ভিত্তিতে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা লিখিত ও মৌখিকে কে, কত পেয়েছিলেন, তার বিস্তারিত বিবরণ ওই তালিকায় উল্লেখ করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিকে, বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া প্রসঙ্গে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটি একেবারে আইনি ব্যাপার। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ বা কোনও এজেন্সি যেখানে নোটিস দিচ্ছে কাউকে, তিনি বা তাঁর আইনজীবীরা কী করবেন, তা নিয়ে দলের কোনও মন্তব্য নেই।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.