ফাইল ফটো
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: গঙ্গা-পদ্মার ভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সদর্থক ভূমিকা দেখাচ্ছে না। টাকা দিচ্ছে না। বিধানসভায় প্রশ্নোত্তরপর্বে এই অভিযোগ তুলে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে নিজের কেন্দ্র বৈষ্ণবনগরে ভাঙন রোধে রাজ্য সরকার কি পরিকল্পনা করেছে তা জানতে চান বিজেপি বিধায়ক স্বাধীন কুমার সরকার।
এর জবাবে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘রাজ্য সরকার সাধ্যমতো বাঁধ মেরামতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের কাজ রাজ্য করছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার তার দায়িত্ব পালন করছে না।’ এরপরই বিজেপি বিধায়ককে বিঁধে শুভেন্দু বলেন, ‘আপনার দলকে বলুন দিল্লি থেকে কিছু ব্যবস্থা করতে। আপনারা তো ১৮ জন সাংসদ রয়েছেন। ভাষণ না দিয়ে কিছু কাজ করতে হবে। শুধু ভাষণ দিলে একবার জেতা যায়। দু’বার জেতা যায় না।’
সম্প্রতি রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ৩-০ স্কোরে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এর মধ্যে খড়গপুর জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। এরপরই নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। বিধানসভায় বিজেপিকে আক্রমণ উপনির্বাচনে জয়েরই প্রতিফলন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এর পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়ক আবদুল খালেক মোল্লার প্রশ্ন ছিল, গঙ্গা ভাঙন রোধে রাজ্য সরকার কী কী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে? জবাব দিতে গিয়ে সেচমন্ত্রী জানান, ফারাক্কা ব্যারেজের ৬৫ কিমি উজানে এবং ৯৮.৫ কিমি ভাটায় মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায় প্রবাহিত গঙ্গা-পদ্মার ১৬৩.৫ কিমি নদীপথের দুই পাড় অত্যন্ত ভাঙন-প্রবণ। ২০০৫-এর ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এই তিন জেলায় নদী ভাঙনে ২১৫০ হেক্টর জমি নদী গর্ভে চলে গিয়েছে। এর ফলে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ ১১৮০ কোটি টাকা।সীমাবদ্ধ আর্থিক ক্ষমতার কারণে, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভাঙন রোধে কাজ সম্পন্ন করার জন্য রাজ্য একাধিকবার কেন্দ্রকে দাবি জানিয়েছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সদর্থক ভূমিকা দেখায়নি। মন্ত্রীর কথায়, রাজ্য সরকার তার সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যেই বিগত তিন বছরে মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় ভাঙন রোধে ২১টি কাজে ১১১.৯৯ কোটি টাকা খরচ করেছে। এছাড়া, ২০১৯-২০ সালে ১১.৫৬ কিমি ভাঙন প্রবণ অংশে আরও ১৯টি কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যাতে ব্যয় হবে ১৬৬.৩৬ কোটি টাকা।
সেচমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রাজ্য সরকার মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলায় ৩৯টি ভাঙন প্রবণ অংশ চিহ্নিত করে মোট ৩২.৩০ কিমি ভাঙন রোধে কাজের পরিকল্পনা করেছে। যাতে খরচ হবে ৪০৪.৭৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পুনরায় আর্থিক অনুদানের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’ সুজাপুরে বাঁধ কেটে দেওয়ার ঘটনার কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কী না? এর উত্তরে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, এফআইআর হয়েছে। ব্যবস্থা কেন হয়নি সেটা দেখছি। এ প্রসঙ্গেই নাম না করে সেখানকার এক সাংসদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে সেচমন্ত্রী বলেন, যেদিন বাঁধ ভাঙে সেদিন এলাকায় গিয়ে ওই সাংসদ স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে ছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.