ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: অভয়ার আবেগকে কাজে লাগিয়ে টাকা তোলা শেষ। ওয়েবসাইট ডিলিট করল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্ট। বস্তুত টাকা তোলার উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই সব গায়েব! ইন্টারনেটে www.wbjdf.com ক্লিক করলে এখন ভো-ভাঁ। লেখা ভেসে উঠছে, ‘দ্য সাইট ক্যান নট বি রিচড। প্লিজ চেক ইন কানেকশন।’ কোথায় গেল জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের ওয়েবসাইট? সংবাদ প্রতিদিনের পক্ষ থেকে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন তোলেননি ফ্রন্টের প্রথম সারির মুখ ডা. আসফাকুল্লা নাইয়া, ডা. অনিকেত মাহাতো।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের এক জুনিয়র ডাক্তার, ফ্রন্টের সদস্য তুহি হাজরা জানিয়েছেন, বিশ্বাস করুন, এসব নিয়ে কিছুই জানি না। পরীক্ষা নিয়ে এখন ব্যস্ত আছি। এমন উত্তরে মন গলছে না আমজনতার। কয়েক কোটি টাকা দুর্নীতির আঁচ সকলেই পেয়েছিলেন। বিশেষ করে প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন (পিএইচএ) এসার পর থেকেই জুনিয়র ডাক্তারদের আর্থিক অনিয়ম ও তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তুলেছে। যার কোনও সদুত্তর নেই জেডিএফের কাছে। ফলে এই পেজ গায়েব হওয়ারই ছিল। বক্তব্য পিএইচএ-র সম্পাদক করবী বড়ালের।
সূত্রের খবর, আর জি করের ঘটনার পর এই ওয়েবসাইটে কিউআর কোড শেয়ার করেই বাজার থেকে টাকা তোলা হয়েছিল। প্রমাণ মুছে ফেলতেই এখন ডিলিট করা হয়েছে ওয়েবসাইট। জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের ওয়েবসাইট উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে আনেন সাংবাদিক তমাল সাহা। তাঁর দাবি, শুনেছি বাজার থেকে অগুনতি টাকা তোলার জন্য পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে। কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তেমন এক মাহেন্দ্রক্ষণে এই ওয়েবসাইটের উধাও হয়ে যাওয়া অনেক প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। ফেসবুকে তমালের সে পোস্টের তলায় ফ্রন্টের এই কীর্তিকলাপ সামনে আসতেই ক্ষুব্ধ আমজনতা। লিখেছেন, এঁদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। সায়ন হালদার লিখেছেন, ‘পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে ফ্রন্টের ডাক্তাররা টাকা মেরে হাওয়া। এখন সেই টাকা নিয়ে ফুর্তি করবে।’
২০২৪-এর আগস্টে আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর, আবেগকে কাজে লাগিয়ে টাকা তুলতে নেমেছিল জেডিএফ। কিউআর কোড শেয়ার করে, অনলাইনের মাধ্যমে বাজার থেকে ৪ কোটি টাকা তোলে ফ্রন্ট। সেই টাকা দিয়ে কী করা হবে? তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকেই। প্রাথমিকভাবে ফ্রন্টের আবদারে টাকা দিয়ে দিলেও পরে সে টাকার হিসাব চান নাগরিক সমাজের অনেকেই। বিপত্তির শুরু এ বছর জানুয়ারির শেষে। ফাঁস হয়ে যায়, বাজার থেকে টাকা তুলে সে টাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাকে দিয়ে আন্দোলনের নামে নাটক করেছিলেন ফ্রন্টের সদস্যরা। এর পর একাধিকবার জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন নামক জুনিয়র চিকিৎসকদের এক সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়, বাজার থেকে তোলা ওই বিপুল টাকা আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের মৃত তরুণী চিকিৎসকের মা-বাবার হাতে তুলে দিতে হবে। যতবার জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের সাংবাদিক সম্মেলনে এই টাকার প্রসঙ্গ উঠেছে, সুচারুভাবে তা এড়িয়ে গিয়েছেন অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদার। আমজনতা মনে করছে, এখন অবস্থা বেগতিক দেখে ওয়েবসাইটটিও ডিলিট করল তারা। সে সময় জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের মিছিলে নাগরিক সমাজের যাঁরা হেঁটেছিলেন, আজ ফ্রন্টের সদস্যদের অদ্ভুত নীরবতায় তাঁরাও অবাক। বলছেন, “যদি ওয়েবসাইটটি যান্ত্রিক কোনও গোলযোগের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে সেটা ওরা বলুক। কোনও কোনও সময় নীরবতার অর্থ অন্যায় স্বীকার করে নেওয়া।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.