দীপঙ্কর মণ্ডল: একাদশের বার্ষিক পরীক্ষার ‘মার্কশিট’ চেয়ে পাঠাল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। রাজ্যের সমস্ত স্কুলের প্রধানদের এই নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস। ফলে মাথায় হাত শিক্ষকদের।
করোনা আবহে উচ্চ মাধ্যমিকের সঙ্গে ছেদ পড়েছিল একাদশ শ্রেণির পরীক্ষাতে। ফলে স্থগিত করে দেওয়া হয় একাদশ শ্রেণির বাকি পরীক্ষা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খুলবে ১০ জুনের পর। সেইমতো এখনও ঠিক হয়ে আছে যে স্কুল খুলবে ১২ জুন। এদিকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস এদিন নির্দেশিকা জারি করে একাদশের বার্ষিক পরীক্ষার ‘মার্কশিট’ চেয়ে পাঠান। নির্দেশিকায় তিনি জানান, “২২ জুনের মধ্যে একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর পাঠাতে হবে।” বস্তুত, সংক্রমণের জেরে ২৩, ২৫ এবং ২৭ মার্চের পরীক্ষা করোনা সতর্কতার জেরে স্থগিত করে দেয় রাজ্য সরকার। লকডাউনের অনেক আগেই বন্ধ করা হয় রাজ্যের প্রতিটি স্কুল। ফলে এই নির্দেশিকা পেয়ে মাথায় হাত পড়েছে রাজ্যের শিক্ষকদের। অনিমেষ হালদার নামে এক শিক্ষক জানান, “লকডাউনের কারণে স্কুলেই থেকে গিয়েছে একাদশের বার্ষিক পরীক্ষার সমস্ত খাতা। তার মানে স্কুল খোলার পর হাতে থাকবে বড়জোর এক সপ্তাহ। তারমধ্যে সমস্ত খাতা দেখে তার নম্বর সংসদকে পাঠাতে হবে। যা কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন তিনি।” শিক্ষক সংগঠন এসটিইএ-র এই নেতার আরও বক্তব্য, “১২ জুন যে স্কুল খুলবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। সংসদের নির্দেশকে মান্যতা দিতে গেলে স্কুল থেকে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার খাতাগুলি এখনই আনতে হবে। কিন্তু লকডাউন চলার কারণে তাও অসম্ভব।”
স্কুলগুলিকে পাঠানো নির্দেশে এদিন সংসদ জানায়, একাদশের পরীক্ষার্থীদের নম্বর ডাক বিভাগের মাধ্যমে ‘হার্ডকপি’ পাঠাতে হবে। পাশাপাশি সংসদের নির্দিষ্ট মেলেও পরীক্ষার্থীদের নম্বরগুলি পাঠাতে হবে। যে তিন দিনের পরীক্ষা হয়নি তার ফাঁকা উত্তরপত্রগুলিও স্কুলগুলিকে সযত্নে গুছিয়ে রাখতে হবে। সেই উত্তরপত্রগুলি সংসদ কোনোও এক সময়ে সংগ্রহ করবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছেন একাদশের বাকি পরীক্ষাগুলো হবে না। সবাইকে দ্বাদশে উত্তীর্ণ করানো হবে। শিক্ষক নেতা স্বপন মন্ডলের বক্তব্য, “সবাই যদি পাশ করে যায় তাহলে নম্বরের কি দরকার। সংসদের এই সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত নয়।” সংসদের সভাপতির এই নির্দেশিকা ঘিরে আপাতত শুরু হয়েছে জলঘোলা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.