সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তপ্ত সন্দেশখালির অলিগলিতে ঘুরে মহিলাদের অভিযোগ শুনেছিলেন গত সোমবার। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দিলেন রাজ্যপাল বোস। সূত্রের খবর, তাঁর রিপোর্ট কার্ডে ছত্রে ছত্রে ‘অত্যাচারিত’ মহিলাদের অভিযোগের কথা। শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার, শিবু হাজরা-সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নামও রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে বলেই খবর। যদিও রাজ্যপালের রিপোর্ট কার্ডের তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমূল।
রাজ্যপাল বোসের দাবি, পুলিশের ছত্রছায়াতেই রয়েছে অভিযুক্তরা। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স কিংবা সিট গঠনের দাবিও জানিয়েছেন রাজ্যপাল। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের কথাও বিবেচনা করে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া রাজ্য সরকার যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করে, সেই পরামর্শও দিয়েছেন বোস।
রাজ্যপালের এই রিপোর্ট কার্ড সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেই দাবি তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “রাজ্যপালের রিপোর্ট পক্ষপাতদুষ্ট, ভিত্তিহীন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজ্যপালের পরিস্থিতি জানার ইচ্ছা থাকলে প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলতেন। সিপিএম, বিজেপির কথা শুনে রিপোর্ট দিচ্ছেন ঠিক হচ্ছে না। চাপড়ায় গিয়ে দেখুন। রিপোর্ট দিন। সন্দেশখালি নিয়ে যে প্রচার চলছে, তা ঠিক নয়। মিথ্যাচারের ফাঁদে পা দিচ্ছেন রাজ্যপাল। তাঁর গলায় বিরোধীদের কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হচ্ছে তা ঠিক নয়।”
উল্লেখ্য, কেরল সফর কাটছাঁট করে সোমবার সকালে দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছন রাজ্যপাল বোস। সেখান থেকে সড়কপথে সোজা সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন। সন্দেশখালির কাছে মিনাখাঁর বামনবাজারের কাছে ১০০ দিনের বকেয়ার দাবিতে তাঁর কনভয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তবে শেষমেশ ধামাখালি নদী পেরিয়ে সন্দেশখালি পৌঁছন রাজ্যপাল। প্রথমে ত্রিমোহনী বাজারে যান। সেখানে স্থানীয় মহিলাদের কাছে নানা অভাব অভিযোগের কথা শোনেন রাজ্যপাল। এক এক করে তাঁদের হাড়হিম করা অভিজ্ঞতার কথা রাজ্যপালকে জানান। শিবু, শাহজাহানদের বিরুদ্ধে কেউ করেন শ্লীলতাহানির অভিযোগ। আবার কারও দাবি জমিজমা লুটপাট করে নিয়েছেন সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বহু মহিলা। অভিযুক্তদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানান গ্রামের নির্যাতিতারা। তাঁদের অভিযোগ শোনার পর যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন রাজ্যপাল। আর তার পরই দিল্লিতে রিপোর্ট কার্ড জমা দিলেন বোস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.