ফাইল ফটো
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। কেউ বা গিয়েছিলেন বেড়াতে। কারোর ছিল চিকিৎসার প্রয়োজন। লকডাউনে ফেঁসে গিয়েছিলেন সবাই। ইতিমধ্যে তাঁদের ফেরাতে দু’দফায় ট্রেন ও বাসের বন্দোবস্ত করেছে রাজ্য সরকার। এমনকী আন্তরাজ্য চলাচলের জন্যও হয়েছে ব্যবস্থা। এবার ভিনরাজ্যে আটকে থাকা বঙ্গবাসীদের ফেরাতে বড় সংখ্যক ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার একটি টুইট করে তিনি বলেন, সাকুল্যে ১০৫টি ট্রেনের ব্যবস্থা হয়েছে। আগামী ১৬ মে থেকে পরপর ট্রেনগুলি নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে ছাড়বে। রোজ বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রায় চারটি করে ট্রেন ছাড়ার সূচি রয়েছে। সর্বাধিক ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেগুলি গন্তব্যে পৌঁছবে। আগামী একমাসে, জুনের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এই পর্ব শেষ হওয়ার কথা।
Towards our commitment to helping all our people stuck in different parts of the country and who want to return back to Bengal, I am pleased to announce that we have arranged 105 additional special trains. (1/2)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 14, 2020
টুইটে সমস্ত তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “ভিনরাজ্যে যাঁরা আটকে রয়েছেন,তাঁদের মধ্যে যাঁরা ঘরে ফিরতে চেয়েছিলেন, তাঁদের আমরা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি আমরা তাঁদের জন্য আরও ১০৫টি স্পেশাল ট্রেনের বন্দোবস্ত করতে পেরেছি। আগামী কয়েকদিন ধরে ট্রেনগুলি নির্দিষ্ট যাত্রী নিয়ে তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছবে।”
Over the coming days, these special trains will embark from different states for various destinations across Bengal bringing our people back home.
The exact details of each of these trains will be available at: https://t.co/DS3yrvQszP (2/2)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 14, 2020
রাজ্যের বাইরে কাজ করেন কয়েক লক্ষ শ্রমিক। কেউ কাজ করেন উত্তরপ্রদেশ, কেউ দিল্লি, কেউ কেরল, কেউ মহারাষ্ট্র বা মধ্যপ্রদেশে। সরকার ১০৫টি ট্রেনের বন্দোবস্ত করে যে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ, কেরল,দিল্লি, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, হায়দরাবাদ, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো একাধিক রাজ্য থেকে ফিরছেন বঙ্গবাসী। তাঁদের মধ্যে সকলে অবশ্যই পরিযায়ী শ্রমিক নন। কাশ্মীর, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, অরুণাচল থেকেও বহু মানুষ ফিরছেন। যাঁদের অনেকেই ঘুরতে গিয়ে আটকে পড়েন। সব মিলিয়ে ১৫টি রাজ্য থেকে কয়েক হাজার যাত্রী নিয়ে ফিরছে ট্রেনগুলি। সেগুলির পৌঁছনোর কথা হাওড়া, বহরমপুর, খড়গপুর, ডানকুনি, নিউ কোচবিহার, নিউ জলপাইগুড়ি, মালদহ ও বর্ধমানের মতো সব জংশন স্টেশনে। কোনও স্টেশন থেকে ট্রেনগুলি ছাড়বে আর এই রাজ্যের কোথায় সেগুলি পৌঁছবে তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর টুইটে দেওয়া সাইটের লিংকে। শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে ফিরতে চেয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানায় সরকার। প্রথম দফায় রাজস্থানের কোটা থেকে বাসে ফেরে কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী। কিন্তু, এভাবে বাসে ফেরানোটা সময়সাপেক্ষ বলে ট্রেনের দাবি ওঠে। তাতে খরচও কম। এর মধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের টিকিট কিনে ট্রেনে ফিরতে হবে বলে রেল জানানোয় বিতর্ক তৈরি হয়। শেষে কেন্দ্র ও রাজ্য ৮৫ ও ১৫ শতাংশের ভাগে টিকিটের দাম দেওয়ার কথা জানিয়ে দেয়। এর মধ্যেই দু দফায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনে রাজ্য। ফিরিয়ে আনা হয় ভেলোরে চিকিৎসা করতে যাওয়া রোগীদেরও। আরেক বিতর্ক তৈরি হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিতে বাংলার সরকার চাইছে না বলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলে। তারও জবাব দেয় রাজ্য। কত ট্রেন কত শ্রমিককে নিয়ে ফিরছে তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয় সরকারি সাইটে। শেষে মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়ে দেন প্রায় ১০০টি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ভিনরাজ্যে আটকে থাকা বঙ্গবাসীকে ফেরাতে। তারপরই বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর এই টুইট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.