মলয় কুণ্ডু: করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত রোগী সামাল দিতে রাজ্যজুড়ে গত বছরের তুলনায় আরও বেশি শয্যা তৈরি রাখছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। ২০২০ সালে যখন রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক হয়েছিল, তখন যত সংখ্যক শয্যা ছিল, তার আরও ৪৫ শতাংশ শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার বেসরকারি হাসপাতালে ২৫ শতাংশ ও সরকারি হাসপাতালগুলিতে (Hospitals) ২০ শতাংশ শয্যা বাড়ানো হবে। এছাড়াও ইএসআই (ESI) হাসপাতালেও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই দ্রুত যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলা হবে বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রতিদিন যেভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সরকারি হোক বা বেসরকারি হাসপাতাল, সর্বত্রই ‘ঠাঁই নাই’ অবস্থা। পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে তাই আগেই প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলার পথে হাঁটতে চাইছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্ষেত্রে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার নবান্নে (Nabanna) করোনা পরিস্থিতির সার্বিক পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেখানে স্বাস্থ্য দপ্তর ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে জড়িত কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে শয্যা, করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেমডেসিভির ওষুধ, অক্সিজেন, অ্যাম্বুল্যান্স–সহ সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়। করোনা কতটা ভয়াবহ হতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আগেভাগে পরিকল্পনা করে কোভিডে লাগাম পরানোর যাবতীয় ব্যবস্থা সেরে ফেলতে চাইছে রাজ্য সরকার।
এই পদক্ষেপে সবথেকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলিতে শয্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে। সরকারি ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ ও বেসরকারি ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ শয্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ইএসআই হাসপাতালগুলিতে আরও এক হাজার শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়াও রাজ্যের ১২টি পুলিশ হাসপাতালে ৩৪০ শয্যা তৈরি রাখতে বলা হয়েছে সেফ হোমের জন্য। সেখানে পুলিশকর্মীরা থাকতে পারবেন। ভোটের ডিউটিতে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনী CAPF-দের কোনও সমস্যা দেখা দিলেই দ্রুত আরটিপিসিআর বা র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ক্ষেত্রে প্রায় ৯০ শতাংশেরই টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। যেটুকু বাকি রয়েছে, দ্রুত সেই টিকাকরণের কাজও সেরে ফেলতে বলা হয়েছে।
এদিকে, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় আরও উন্নত হচ্ছে টেলিমেডিসিন ব্যবস্থা। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে যোগাযোগ করে চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্তকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবেন। এতদিন টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে করোনা রোগীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন চিকিৎসকরা। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বৈদ্যুতিন মাধ্যমের বিষয়টিও। শুক্রবার নবান্নে রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির পর্যালোচনা বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.