Advertisement
Advertisement

Breaking News

West Bengal Assembly

বিধানসভা অধিবেশনে ভাষণের খসড়ায় আপত্তি রাজ্যপালের, মুখ্যমন্ত্রীকে তলব রাজভবনে

ফের নতুন ইস্যুতে সংঘাতের পথে রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্যপাল।

West Bengal Governor Jagdeep Dhankhar raises objection on draft speech for upcoming assembly session | Sangbad Pratidin
Published by: Abhisek Rakshit
  • Posted:June 29, 2021 11:53 am
  • Updated:July 18, 2022 6:06 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগেই রাজ্যপালের লিখিত ভাষণ পাঠ ঘিরে ফের নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের টানাপোড়েন আরও একদফা তুঙ্গে পৌঁছে গেল। অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপাল যে ভাষণ পাঠ করবেন তার খসড়া রাজ্য মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্তের পরই আইন মোতাবেক নবান্ন ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে। সাংবিধানিক রীতি মেনে রাজভবনে পৌঁছে যাওয়া ওই খসড়া আগামী ২ জুলাই, শুক্রবার দুপুর দু’টোয় জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankar) পাঠ করার কথা। কিন্তু সোমবার উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে রাজ্যপাল ওই খসড়ায় কিছু লাইনে তাঁর আপত্তি জানিয়ে পরিবর্তনের জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছেন।

কিন্তু নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যপাল ডাকলে সাংবিধানিকভাবে রাজভবনে যেতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) কোনও আপত্তি নেই। চা খেতে বা কথা বলতেও কোনও অসুবিধা নেই মুখ্যমন্ত্রীর। তবে রাজ্যপাল যদি লিখিত ভাষণের খসড়া পরিবর্তনের জন্যই ডাকেন তা হলে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী রাজ্যপালের ভাষণ সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারই লিখে দেয়, রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করার পর রাজ্যপাল শুধু পাঠ করেন। এক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যে আইন মেনে ওই ভাষণের খসড়া অনুমোদন করে দু’দিন আগে রাজভবনে পাঠিয়েও দিয়েছে, তাই কোনওভাবে খসড়া পরিবর্তন সম্ভব নয়। স্বাধীনতার পর বাংলায় আসা সমস্ত রাজ্যপালই রীতি মেনে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত লিখিত ভাষণ পাঠ করেছেন, এমনকী, বর্তমান রাজ্যপাল ধনকড়ও গতবছর রাজ্য সরকারের পাঠানো ভাষণই হুবহু পাঠ করেছেন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও যে লিখিত ভাষণ অনুমোদন করে রাষ্ট্রপতিকে পাঠায় তিনিও তাই হুবহু পাঠ করেন বলে রীতি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: Corona: তৃতীয় ঢেউ রুখতে কোমর বাঁধছে রাজ্য, এবার শিশুদের জন্য বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্স]

নবনির্বাচিত সরকারের বাজেট পেশের এই অধিবেশন শুরু হবে শুক্রবার দুপুরে রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে। প্রায় দু’সপ্তাহের এই বাজেট অধিবেশন নিয়ে এদিন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে সর্বদলীয় বৈঠকও বসে। বৈঠকে সমস্ত দলকেই পরিষদীয় রীতিনীতি মেনে আসন্ন অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সাহায্যের আবেদন করেন স্পিকার। পরে বিধানসভার কার্যবিবরণী কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত অধিবেশনের কার্যসূচি ঠিক হয়। প্রথমদিন ২ জুলাই রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াও দ্বিতীয় পর্বে ডেপুটি স্পিকার পদে রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্বাচিত করা হবে। ৭ জুলাই নয়া সরকারের বাজেট পেশ হবে। সূত্রের খবর, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ থাকায় শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই বাজেট পড়তে পারেন। আগামী ৫ জুলাই শোকপ্রস্তাব এবং ৬ জুলাই রাজ্যপালের ভাষণের উপর ধন্যবাদজ্ঞাপক বিতর্ক শুরু হবে। তবে ৬ জুলাই দ্বিতীয়ার্ধে বিধানপরিষদ গঠন নিয়ে গঠিত কমিটির রিপোর্টের উপর প্রস্তাব আনা হবে। কারণ, গত ২০১১ সালেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই বিধানসভায় বিধানপরিষদের বিল পেশ করেন। তখন বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনার জন্য স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ই একটা অ্যাডহক কমিটি গড়ে দেন। সেই কমিটি রিপোর্ট বিধানসভায় জমা দিলেও পুস্তিকা আকারে রিপোর্টটি এখনও বিধায়কদের বিলি করা হয়নি। এদিন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবু জানান, “রিপোর্টটি পুস্তিকা আকারে সমস্ত পরিষদীয় দলের মাধ্যমে বিধায়কদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।”

[আরও পড়ুন: পুরনো ভাড়ায় বাস চালাতে নারাজ মালিকরা, করোনা কালে ‘স্পেশ্যাল ফেয়ার’ চালুর দাবি]

উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীতালিকা ঘোষণার দিনই মমতা ঘোষণা করেছিলেন, তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে বিধান পরিষদ গঠন করবে তাঁর সরকার। তৃণমূল কংগ্রেস এবার দলের অনেক প্রবীণ বিধায়ক এবং তরুণ নেতাকেও প্রার্থী করতে পারেনি। তাঁদের বিধান পরিষদে জায়গা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। কিন্তু সরকারের দায়িত্বে আসার মাত্র দু’মাসের মধ্যে একটার পর একটা প্রতিশ্রুতি পূরণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তাঁর ইচ্ছাতেই স্পিকারের কমিটির রিপোর্ট নিয়ে প্রথম অধিবেশনেই আলোচনা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। যদিও রাজ্য সরকার প্রস্তাব নিলেও রাজ্যপাল মারফত সেটিকে দিল্লিতে পাঠাতে হবে। তারপর লোকসভা ও রাজ্যসভায় তা বিল আকারে পাস করিয়ে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর পেতে পারবে। সূত্রের খবর, বিধানপরিষদের প্রস্তাব নিয়ে বিজেপি অধিবেশনে বিরোধিতা করতে পারে।

এদিকে, ভ্যাকসিনকাণ্ড থেকে নজর সরিয়ে নিতেই রাজ্য সরকার ও রাজ্যপাল সংঘাতে জড়িয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেস ও সিপিএমের। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বা তাঁকে সরাতে চাইলে কেন রাজ্য সরকার রাষ্ট্রপতির কাছে নালিশ করছে না প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরি। বিষয়টিকে কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসকদলের গোপন আঁতাঁত বলে মনে করছে এই দুই দল। ভ্যাকসিনকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় রাজ্য তখন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের সংঘাত লোক দেখানো বলে মনে করছে আলিমুদ্দিন। ভ্যাকসিনকাণ্ডে জড়িতদের আড়াল করতে নবান্ন ও রাজভবন সক্রিয় হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement