মলয় কুণ্ডু: বাংলাদেশে (Bangladesh) সাম্প্রদায়িক হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যে যাতে অশান্তি না ছড়ায়, তার জন্য কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিল প্রশাসন। রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের এক বার্তায় জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখুন। সমস্ত অফিসার ও বাহিনীকে সক্রিয় থাকতে বলুন, যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়।
দুর্গাপুজোর সময় সামাজিক মাধ্যমে প্ররোচনামূলক কিছু মেসেজ ছড়িয়ে পড়ে। তার ফলে কিছু সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটে। যদিও বাংলাদেশ সরকার দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু পড়শি দেশের ঘটনার পরই এ রাজ্যে তার রেশ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। তাই বাড়তি সতর্ক থাকতে চাইছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের এডিজি (ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চ) পুলিশ কর্তাদের পাশাপাশি ডিজি (রেল)কেও চিঠি দিয়ে সেই বিষয়টিই উল্লেখ করেছেন।
তিনি চিঠিতে লিখেছেন, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও নোয়াখালি জেলায় কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তার পরিপ্রক্ষিতে সামাজিক মাধ্যম ভরে গিয়েছে বিভিন্ন মেসেজে। এর ফলে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি অতি স্পর্শকাতর হয়ে রয়েছে। প্রশাসনের কাছে তথ্য রয়েছে, এই ঘটনার পর থেকেই বেশ কয়েকটি কট্টর গোষ্ঠী সংবাদমাধ্যমে তাদের উত্তেজনামূলক বক্তব্য পেশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তারা আবেদন জানিয়েছে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার। রাজ্যে ইতিমধ্যেই দুর্গাপুজোর বিসর্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত। ১৮ ও ১৯ অক্টোবর রাজ্যে ফতেহ দোহাজ দাহাম (নবি দিবস) পালিত হবে। এমন পরিস্থিতিতে যাতে কোনও অপ্রীতিকর অবস্থা কোথাও না হয়, তার উপর কড়া নজর রাখতে হবে বলে সতর্কবার্তায় জানিয়েছেন এডিজি (আইবি)।
রাজ্যের পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার, এসবি’র অতিরিক্ত সিপি, রাজ্যের সমস্ত পুলিশ সুপার, সব রেঞ্জের ডিআইজি ও আইজিপি, উত্তরবঙ্গের আইজি (আইবি), আঞ্চলিক আইজি, এডিজি, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা), রেলের ডিজিপি-কে এডিজি (আইবি)-র তরফে এই সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে। কারণ, বাংলাদেশে এই ধরনের গোলমালের রেশ ছড়িয়ে দুর্গাপুজোর সময় এ রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এমনিতেই পুজোর সময় নাশকতার শঙ্কা থাকায় একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। পুজোর মাঝেই বাংলাদেশের ঘটনা রাজ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। তাই আগে থেকেই পুলিশকে কড়া নজরদারি চালাতে বলা হচ্ছে। যাতে কোনও উসকানি বা প্ররোচনা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ঘেঁষা সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়তি সতর্কতা ও নজরদারি রাখা প্রয়োজন। সেখানকার জেলাগুলির পুলিশ সুপারদের বিষয়টির উপর নজর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রথম থেকে সতর্ক রয়েছে পুলিশ। গোয়েন্দারাও প্রতিটি পদক্ষেপ নজর রাখছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.