দীপঙ্কর মণ্ডল: মেয়েদের কৌমার্যকে ‘সিলড বোতল’-এর সঙ্গে তুলনা করে দেশজুড়ে নিন্দিত হয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক। শিক্ষিকারা স্ত্রীরোগে ভোগার কথা বলে বদলি চাইছেন দাবি করে নয়া বিতর্ক তৈরি করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’-র জরুরি সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন পার্থবাবু। এদিন শিক্ষক বদলি প্রসঙ্গে হঠাৎ করে তিনি বলেন, “এত বেশি মহিলা শিক্ষিকা স্ত্রী রোগে ভুগছেন যে আমি নিজে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি।”
শিক্ষক বদলি প্রসঙ্গে হঠাৎ করে তিনি বলেন, “এত বেশি মহিলা শিক্ষিকা স্ত্রী রোগে ভুগছেন যে আমি নিজে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি।”
বাড়ি থেকে দূরে থাকা শিক্ষক ও শিক্ষিকারাই সাধারণত বদলির আবেদন করেন। এক্ষেত্রে বিক্ষিপ্তভাবে সত্য গোপনও করেন অনেকে । শিক্ষামহলের বক্তব্য, অসুস্থতার কারণে বদলি চাওয়া সমস্ত শিক্ষিকার উদ্দেশে ব্যঙ্গ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। দমদমের বাসিন্দা এক শিক্ষিকা সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার একটি স্কুলে পড়ান। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ওই শিক্ষিকার বক্তব্য, “মহিলাদের অনেক সমস্যা থাকে। চিকিৎসকদের কাছে বিষয়গুলি জানা উচিত পার্থবাবুর। বদলি চেয়ে যদি কেউ সত্যি কথা নাও বলেন, তার জন্য সমগ্র শিক্ষিকা সমাজকে অপমানের এক্তিয়ার ওনাকে কে দিল।” কলকাতার এক শিক্ষিকা জানিয়েছেন, “আমার বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী হয়তো জানেন না যে এই বয়সে মেনোপজ সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। আমি নিজে এই সমস্যায় ভুগছি। মাসে আমাকে কয়েকদিন ছুটি নিতে হয়। স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত বক্তব্যে অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি।”
কলকাতার এক শিক্ষিকা জানিয়েছেন, “আমার বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী হয়তো জানেন না যে এই বয়সে মেনোপজ সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। আমি নিজে এই সমস্যায় ভুগছি। মাসে আমাকে কয়েকদিন ছুটি নিতে হয়। স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত বক্তব্যে অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি।”
বদলির জন্য কাটমানির অভিযোগও তুলেছেন শিক্ষাকারা। এক শিক্ষিকা জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে তিনি একটি স্কুলে পড়ান। বাড়ির কাছে আসতে চেয়ে আবেদনের পর তাঁর কাছে কাটমানির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষিকার প্রশ্ন, “মহিলাদের যে ঋতুকালীন সমস্যা থাকে সেকথা শিক্ষামন্ত্রী জানেন তো।” শিক্ষামন্ত্রী ‘স্ত্রী রোগ’ সংক্রান্ত মন্তব্যের পর নজরুল মঞ্চে হাততালি এবং হাসির রোল শোনা গিয়েছে। পরে কয়েকজন মহিলা শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে নিজেদের অস্বস্তি এবং ক্ষোভ গোপন করেননি। তৃণমূলের শাখা সংগঠনের সভায় ছিলেন এমন এক শিক্ষক মনে করছেন পার্থবাবু মুখ ফসকে এমন বলে ফেলেছেন। যদিও নিজের বক্তব্যের মাঝে এ নিয়ে কোনও সংশোধনী আনেননি পার্থবাবু। তাঁর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, “কোনও শিক্ষিকা যদি স্ত্রী রোগের উল্লেখ করে বদলি চেয়েও থাকেন তা সত্ত্বেও দাদা এমন না বললেই পারতেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.