সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চায়েত ভোটের জন্য দল প্রস্তুত নয়। কার্যত স্বীকার করে নিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। এখনও পর্যন্ত বুথ কমিটি দূরঅস্ত, সব মণ্ডল কমিটিও গঠন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। কমিটি গঠন নিয়ে দলের অন্দরে যে ক্ষোভ রয়েছে তাও স্বীকার করে নিয়েছেন।
শুক্রবার থেকে জয়পুরে শুরু হয়েছে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। সেখানে বঙ্গের সংগঠন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তবে সংগঠনের অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে কী রিপোর্ট দেবেন তা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বৃহস্পতিবার সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়েই জয়পুর চলে যান সুকান্ত।
ঝাড়গ্রামের সভা থেকে বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঢাক বাজিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পঞ্চায়েত নির্বাচন করবেন। তাই দ্রুত অসমাপ্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার বক্তব্যের পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে। কিন্তু বিজেপি (BJP) কি আদৌ গ্রামের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো সাংগঠনিক অবস্থায় রয়েছে? প্রশ্ন উঠেছে দলের অভ্যন্তরেই। কারণ জেলা কমিটির পর মণ্ডল কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই দলের ভিতর বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। অনেক জেলাতেই দল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। অভিযোগের তির রাজ্য নেতৃত্বের দিকে। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ দলত্যাগী নেতাকর্মীদের। ক্ষোভে নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন অনেক শীর্ষ নেতা। এমন পরিস্থিতিতে ভোট হলে মানুষের মনে দাগ কাটার মতো ফল হবে না বলেই মনে করছেন অনেক নেতাই। যদিও খারাপ ফলের আশঙ্কা করে আগেভাগেই শাসক দলের উপর দোষ চাপিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।
এদিন দিল্লিতে তিনি বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly) পর থেকেই রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস চলছে। আমাদের বহু নেতাকর্মী এখনও ঘরছাড়া।” গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের উদাহরণ টেনে সুকান্ত দাবি করেন, “শাসকদল চায় না পঞ্চায়েতে শান্তিপূর্ণ ভোট হোক। অনেক জায়গাতেই বিরোধীদের মনোনয়ন পেশ করতে দেওয়া হয়নি।” এবারও শাসক দল একই পথ অবলম্বন করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তবে সংগঠনও যে গুছিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি তাও স্বীকার করেন। তিনি জানান, জেলা কমিটি গঠন হয়েছে। মণ্ডল কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এর পর বুথ কমিটি গঠন করা হবে। এই মুহূর্তে রাজ্যে বুথের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। কয়েক মাসের মধ্যে কীভাবে বিপুল সংখ্যক বুথে কমিটি গঠন সম্ভব তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি। জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের বক্তব্য রাখার সুযোগ পেলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন বলে জানান।
ভোট-পরবর্তী হিংসা, রাজ্যে দুর্নীতি ও কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেবেন বলে জানান। সুকান্ত ছাড়াও বঙ্গ বিজেপির আরও তিন নেতা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), অমিতাভ চক্রবর্তী ও অনুপম হাজরা (Anupam Hazra) জয়পুরের কর্মসমিতির বৈঠকের যোগ দেবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.