সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা! মারণ ভাইরাস করোনার সংক্রমণ রুখতে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন (Lockdown) চলছে ভারতে। সেসময় দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে গরিব মানুষদের জন্য খুব খারাপ দিন আসতে চলছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সবার কাছে আবেদন করেছিলেন প্রান্তিক শ্রেণির মানুষরা, যেমন বাড়ির পরিচারক বা পরিচারিকা কিংবা বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত মানুষদের মাইনে না কাটতে। অনেকে সেই আবেদনে সাড়া দিলেও খোদ বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রীর আবেদনকে মান্যতা দেয়নি বলেই সূত্রের খবর! লকডাউনের মধ্যে কোনও মাইনে পাননি তাঁরা। ফলে প্রবল আর্থিক সংকটে পড়তে হয়েছে রাজ্য বিজেপি দপ্তরের ২৪ জন কর্মীকে।
রাজ্য বিজেপির একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউন জারির পর থেকেই বন্ধ রয়েছে বঙ্গ বিজেপির সদর দপ্তর মুরলিধর লেনের অফিস। নেতারা বাড়ি থেকেই দলের কাজ করছেন। আসছেন না কোনও কর্মী। এর ফলে রাজ্য দপ্তরের বিভিন্ন গাড়ির চালক থেকে শুরু করে যাঁরা অফিস পরিষ্কারের কাজ করেন তাঁরা লকডাউনের সময় কোনও মাইনে পাননি। ফলে প্রচণ্ড আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে তাঁদের। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বঙ্গ বিজেপি নেতাদের তীব্র সমালোচনা করছে বিরোধীরা। কটাক্ষ করে বলছে, রাজ্য বিজেপি নেতারা এখন করোনা আর আমফান নিয়ে রাজনীতি করতেই ব্যস্ত। বড় বড় সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছেন। তাই প্রদীপের নিচে থাকা অন্ধকারের মতো, অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকা কর্মীদের ছোটখাট সমস্যা চোখেই পড়ছে না তাঁদের।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী জানান, খুব একটা বেশি টাকা দেওয়া হয় না। আর লকডাউনের মধ্যে তো একটা টাকাও পাননি তারা। ফলে পরিবারের মানুষদের মুখে কী করে খাবার তুলে দেব তা বুঝতে পারছেন না।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। তাঁদের দাবি, এই ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে বিজেপিকে বদনাম করার চেষ্টা চলছে।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেই ব্যঙ্গ করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেন্দ্র যখন জনধন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষকে টাকা পাঠাচ্ছে তখন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকার যুক্তিটা ঠিক হজম হচ্ছে না। আসলে এই রাজ্য থেকে ১৮ জন সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন বঙ্গ বিজেপির কিছু শীর্ষ নেতা। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন তাঁদের দৈনন্দিন ফাইফরমায়েশের কাজে ব্যস্ত থাকা কর্মীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.