দীপঙ্কর মণ্ডল: লন্ডন থেকে ফিরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আইসোলেশন দূর অস্ত। বদলে ছেলেকে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন শপিং মলে। রাজ্যের মুখ্য প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে কাজ করেছেন, তখনও সঙ্গী ছিল ছেলে। এভাবেই কেটে গিয়েছে প্রায় দু’দিন। পরে যখন জানা গেল নবান্নের স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দপ্তরের ওই আমলার ছেলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, তখন নবান্নজুড়ে আশঙ্কার আবহ। যেখানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে রাজ্য সরকারের তরফে এত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, জনসচেতনতা প্রচার চলছে, সেখানে নিজের ছেলেকে সময়মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করিয়ে এভাবে ঘুরে বেড়িয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে সমালোচনার তুমুল ঝড়।
নবান্নের স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বে রয়েছেন করোনা আক্রান্ত এই তরুণের মা। যা মুখ্যমন্ত্রীর অধীনস্ত দপ্তর। নবান্ন এবং মহাকরণে তাঁর অফিস। শুধু তাই নয়, নবান্নের ৬ এবং ১৪ তলায় এই দপ্তরের কাজ হয়। সোমবার এই WBCS অফিসার নবান্নে ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই তিনি সমস্ত কাজ করেছেন, সেরেছেন গুরুত্বপূ্র্ণ বৈঠক। সেসময় তাঁর সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা এখন তীব্র আতঙ্কে ভুগছেন। আশঙ্কায় কাঁপছে তাঁদের পরিবারও।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা নিজেদের সেই আশঙ্কা কথা তুলে ধরছেন। মলয় মুখোপাধ্যায় নামে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মী ফেসবুকে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ইন্দ্রনীল বাগচি নামে আরেক দপ্তরের আধিকারিকের স্ত্রীও ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, নিজের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য যথাযথ শাস্তি হোক ওই আমলার।
সূত্রের খবর, নিজের অধীনে থাকা দপ্তরের আমলার এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার বিকেলে নবান্নের গেটে এক অনুষ্ঠানে নিজের সেই উষ্মার কথা গোপনও রাখেননি তিনি। নাম না করেই দিয়েছেন কড়া বার্তা। স্পষ্টই বলেছেন, “প্রভাব খাটিয়ে পরীক্ষা এড়িয়ে গিয়ে অবিবেচকের মতো কাজ করবেন না। বাইরে থেকে ফিরলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান, আইসোলেশনে থাকুন ক’দিন।” সূত্রের খবর, ওই আমলার ভূমিকায় নবান্নের অন্দরেই ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। সরকারি আমলা নিজেই যদি এমন কাজ করেন, তাহলে জনসচেতনতায় তিনি কী ভূমিকাই বা নিতে পারেন, এই প্রশ্ন উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.