স্টাফ রিপোর্টার: ‘আজাদ কাশ্মীর’ (Azad Kashmir) বিতর্কে কড়া অবস্থান মধ্যশিক্ষা পর্ষদের। মঙ্গলবারই পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছিল, এটা কারও ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশে করা হয়নি। যারা যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেইমতো বুধবারই কড়া ব্যবস্থার ইঙ্গিত দিল পর্ষদ। টেস্ট পেপারের প্রশ্নপত্রে ‘আজাদ কাশ্মীরে’র উল্লেখের ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাঁদের মধ্যে যেমন রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল থেকে আসা টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রগুলি সংকলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্ষদের আধিকারিকরা রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকরাও। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board Of Secondary Education) সূত্রে খবর, পর্ষদের আইন অনুযায়ী প্রত্যেককে ‘লিখিত সতর্কীকরণ’ পাঠানো হয়েছে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের তরফ থেকে যা যা করার সব করে দিয়েছি। ঘটনায় জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলকে লিখিত সতর্কীকরণ পাঠানো হয়েছে। আমাদের পর্ষদের আইনের ধারা অনুযায়ী সতর্কীকরণ একটা শাস্তি। তিনটি স্কুলের যারা যারা জড়িত এবং আমাদের সংকলনকারী দলের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনায় পুনরাবৃত্তি না ঘটে।”
বিভিন্ন স্কুলে হওয়া মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র একত্রিত করে বিগত বছরের মতো এবছরও টেস্ট পেপার প্রকাশ করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাতে তিনটি স্কুলের ইতিহাস প্রশ্নপত্রে ছিল ‘আজাদ কাশ্মীরে’র উল্লেখ। মঙ্গলবার যা প্রকাশ্যে আসতেই শিক্ষা মহল তো বটেই, রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়ে যায়। ১৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় বিভাগ ‘খ’-এর উপ-বিভাগ ২.৪-এর প্রথম প্রশ্নে প্রদত্ত ভারতবর্ষের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলো চিহ্নিত বা নামাঙ্কিত করতে বলা হয়েছিল। প্রশ্নের ৪টি উত্তরের প্রথমটিই ছিল ‘আজাদ কাশ্মীর’। বিতর্কিত শব্দদ্বয়ের উল্লেখ ছিল ১২৮ এবং ১৭২ নম্বর পৃষ্ঠাতেও। বিতর্ক তুঙ্গে উঠতেই তৎপর হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে মঙ্গলবার সন্ধেতেই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে দেওয়া হয় সংশোধনী। তাতে ১৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে ‘আজাদ কাশ্মীর’কে ‘কাশ্মীর’ হিসাবে পড়তে বলা হয়। টেস্ট পেপারে ‘আজাদ কাশ্মীর’ উল্লিখিত অন্যান্য প্রশ্নগুলিও বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয় সংশোধনীতে। ওইদিনই পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছিলেন, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৩২ নম্বর পৃষ্ঠার প্রশ্নপত্রটি মালদহের (Maldah) রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের। পর্ষদ সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, ওই স্কুলের ইতিহাসের প্রশ্নপত্র ইতিহাসের শিক্ষককে দিয়ে করানো হয়নি। কর্মশিক্ষার শিক্ষক করেছিলেন সেই প্রশ্ন। মূলত এর জন্যই পর্ষদের তরফে স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী তপহরানন্দ মহারাজকেও পাঠানো হয়েছে ‘লিখিত সতর্কীকরণ’। যদিও প্রধান শিক্ষক মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন, ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে আজাদ কাশ্মীর বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। সেই সরকারি পাঠ্যপুস্তক থেকেই মানচিত্রে জায়গাটি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.