নব্যেন্দু হাজরা: আগামিকাল অর্থাৎ সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের (Ram Temple) উদ্বোধন। বাংলার ফুলেই সেজে উঠেছে সেখানকার প্রবেশপথ থেকে মন্দির। ফুল গিয়েছে হাওড়া ফুলমার্কেট থেকে। শুধু তাই নয়, রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মন্দিরও সেজে উঠেছে। সেখানকার ফুলের অধিকাংশের জোগানদারও বাংলা। মুলত গাঁদা-চন্দ্রমল্লিকা-রজনীগন্ধা-গোলাপ থেকে শুরু করে দেবদারু-অ্যাসপ্যারাস বাহারিপাতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু গোল বেধেছে অন্যত্র। আজ এবং আগামিকাল রয়েছে বিয়ের তারিখ। ফলে বিয়ে, বউভাত উপলক্ষে সেখানেও ফুলের চাহিদা ব্যাপক। যা জোগান দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে ফুলচাষীদের। স্বাভাবিকভাবেই দামও বেড়েছে চড়চড়িয়ে।
কোনও বাজারে দ্বিগুণ, তো কোথা তিনগুণ। যে যেমন পারছেন দাম নিচ্ছেন। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, যেহেতু শীতকালে ফুলের চাষ খুব ভালো হয়। তাই ফুলের জোগান আছে। কিন্তু দাম চড়চড় করে বেড়েছে। শনিবার সকালে হাওড়া ফুলমার্কেটে ব্যাঙ্গালোর গোলাপের দাম ছিল ২০-২৫ টাকা পিস। হাত ঘুরে তা বাজারভেদে ৪০-৫০ টাকা পিসে বিকোচ্ছে। রবিবার তা আরও বাড়তে পারে। ডেকরেশনের কাজ করা এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘কলকাতার কাঁকুড়গাছির এক কমপ্লেক্সে আমার মন্দির সাজানোর কাজ হচ্ছে। সাজানোর কাজে ব্যবহার করা কামিনীপাতার যে বান্ডিল হোলসেল মার্কেট থেকে ৬০০-৭০০ টাকায় কিনি, তার দামই শনিবার আড়াই তিন হাজার টাকা হয়েছে। লাল গোলাপও ৮-১০ টাকা পিস। খোলা মার্কেটে আরও বেশিই।’’ ব্যবসায়ীদের কথায়, বিভিন্ন কমপ্লেক্সের মন্দির, পাড়ার মন্দির ফুল দিয়ে সাজাচ্ছেন অনেকে। তাতেই চাহিদা তুঙ্গ। এর মধ্যেই আবার বিয়ের তারিখ পর পর। গাড়ি, গেট সাজানো থেকে ফুলসজ্জ্যার খাট সাজানো, সবই তো রয়েছে। ফলে ক’দিন ফুলের তুঙ্গ বাজার। মন্দির সাজাতে, গাঁদা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকার চাহিদা সবথেকে বেশি।
সারা বাংলা ফুলচাষী ও ফুলব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘এমনিতেই মাঘ মাসে ৭ দিন বিয়ের লগন রয়েছে। আবার প্রথম ও দ্বিতীয় লগনের দিন হল ২১ ও ২২ জানুয়ারী। ফলস্বরূপ বিয়ের পাশাপাশি মন্দির সাজানোর জন্য ব্যাপক পরিমাণে ফুলের চাহিদা থাকায় ফুলের দাম ঊর্ধ্বমুখী।’’ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এরাজ্যের বিভিন্ন মন্দির সাজানোর জন্য যেমন ব্যাপক ফুলের প্রয়োজন, পাশাপাশি প্রতিবেশী রাজ্যগুলোর মন্দির সাজানোর জন্যও ফুল গিয়েছে এখান থেকে। যে কারণেই এই বিপূল চাহিদা। আর এই গেঁড়োতেই বিয়েবাড়ির ফুলের খরচ এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। মল্লিকঘাট ফুলবাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, সাধারণ সময়ে যেখানে পাইকারী তিন ফুটের ২০পিস গাঁদার মালার দাম থাকে ১৫০ টাকা, সেটাই শনিবার বেড়ে হয়েছে ৩৫০ টাকা। ২০ পিস রজনীর চেন ৪০০ টাকা, ১৫০ টাকা ১০০ পিস যে গোলাপ, তার দাম হয়েছে ৬০০-৮০০, চার টাকা পিসের চন্দ্রমল্লিকার দাম হয়েছে ১০ টাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.