রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ফাইল ছবি।
বিধান নস্কর, সল্টলেক: ফের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জালে রাজ্যের এক মন্ত্রী। প্রায় ২১ ঘণ্টা লাগাতার তল্লাশির পর গ্রেপ্তার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। “গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হলাম আমি”, ইডি দপ্তরে ঢোকার আগে জানালেন জ্যোতিপ্রিয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mallick ) সল্টলেকের বিসি ব্লকের বাড়িতে পৌঁছন ইডি আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘিরে ফেলে তাঁর বাড়ি। টানা ২১ ঘণ্টা ধরে চলে জোর তল্লাশি। শেষমেশ গ্রেপ্তার করা হয় জ্যোতিপ্রিয়কে। ইডি তল্লাশির মাঝে রাজ্যের মন্ত্রীকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে যান বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত। তবে মন্ত্রীর দেখা পাননি তিনি।
সময় যত গড়াতে থাকে ততই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়ির সামনে বাড়তে থাকে ভিড়। সন্ধ্যার দিকে বিধাননগর উত্তর থানার আইসি প্রতীক বসুকে ডেকে পাঠান ইডি আধিকারিকরা। এর পরই জ্যোতিপ্রিয়র বাড়ির দুই দিকের রাস্তার মোড়ে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। ওই রাস্তায় পথচলতিদের গতিবিধিও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়া কাউকেই ওই রাস্তায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। রাত সাড়ে নটা নাগাদ মন্ত্রীর বাড়ির আশপাশে বাড়ানো হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীও।
এছাড়া, এদিন ইডি আরও সাতটি জায়গায় তল্লাশি চালায়। নাগেরবাজারে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আপ্ত সহায়ক অমিত দের দুটি ফ্ল্যাটেও হানা দেন আধিকারিকরা। দুটি ফ্ল্যাট বন্ধ থাকায় প্রথমে ঢুকতে পারেনি ইডি। পুজোর ছুটিতে পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন অমিত। তড়িঘড়ি ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে। ইডির তলব পাওয়ামাত্রই এদিন বিকেলে স্বপরিবারে কলকাতায় পৌঁছন অমিত। দমদম বিমানবন্দর থেকে কার্যত কড়া নজরদারিতে নাগেরবাজারের ফ্ল্যাটে পৌঁছন অমিত। তার পরই শুরু হয় তল্লাশি।
এছাড়া হাওড়াতেও জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ আরও একজনের বাড়িতেও হানা দেন তদন্তকারীরা। উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার হন ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। সূত্রের খবর, তাঁর গ্রেপ্তারির পর থেকে বার বার উঠে আসে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এদিন দাবি করেন রেশন দুর্নীতিতে আগাগোড়াই যুক্ত জ্যোতিপ্রিয়। যদিও ‘বালু’কে অকারণে হেনস্তা করা হয়েছে বলেই দাবি মুখ্যমন্ত্রী। খাদ্যমন্ত্রী সুগারের রোগী। তাই ইডির ‘চাপে’ তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কাও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও অঘটন ঘটলে বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই হুঁশিয়ারি তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.